অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট দেশে ব্যবহার করা যাবে না

অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট দেশে ব্যবহার করা যাবে না

আগামী ১ জুলাই দেশে চালু হচ্ছে ন্যাশলাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) প্রযুক্তি। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) এই যন্ত্র বসানোর মধ্য দিয়ে কর ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে মোবাইল আমদানির দিন শেষ হতে চলছে। ১ জুলাইয়ের পর থেকে জেনে নিতে হবে মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বরটি বিটিআরসিতে বসানো এনইআইআর ডিভাইসে যুক্ত আছে কিনা। অর্থাৎ জুলাই থেকে অবৈধ পথে আসা মোবাইল হ্যান্ডসেট দেশে আর ব্যবহার করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহককে উদ্বিগ্ন না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে বিটিআরসি।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, ‘৩০ জুন পর্যন্ত গ্রাহকের হাতে যেসব হ্যান্ডসেট আছে তা বন্ধ হবে না। ১ জুলাই থেকে যে হ্যান্ডসেটগুলো নতুন করে আসবে, সেগুলোর আইএমইআই নম্বর বিটিআরসিতে স্থাপিত ন্যাশলাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) এর সঙ্গে ম্যাচ করতে হবে। কোন হ্যান্ডসেট চালু করলেই একটি মেসেজের মাধ্যমে তা জানা যাবে। যদি ম্যাচ না করলেও গ্রাহক ১০ থেকে ১৫ দিন সময় পাবে। প্রয়োজনীয় কাগজ বিটিআরসিতে পাঠাতে হবে। অর্থাৎ এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অবৈধভাবে আমদানি করা হ্যান্ডসেট ভ্যাট ট্যাক্স দিয়ে বৈধ করার কোন উপায় নেই।’

এদিকে, বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক ড. মো. সোহেল রানার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রাহক কর্তৃক বর্তমান মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হ্যান্ডসেটসমূহ ৩০ জুনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে। ফলে ১ জুলাই থেকে নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হ্যান্ডসেটসমূহ বন্ধ হবে না।

এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে ড. মো. সোহেল রানা বলেন, ‘দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত বৈধ অবৈধ সকল সেটই ৩০ জুনের মধ্যে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ বর্তমানে গ্রাহকের হাতে থাকা কোন সেটই বন্ধ হচ্ছে না। তবে ১ জুলাইয়ের পর থেকে হ্যান্ডসেট কিনতে গ্রাহককে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ১ জুলাইয়ের পর ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যেসব হ্যান্ডসেট বাজারে আসবে তা বিটিআরসির ওয়েবসাইটে নিবন্ধন হবে না। এমনকি বর্তমানে বাজারে থাকা অবৈধ হ্যান্ডসেটও নিবন্ধনের আওয়াতায় আসছে না। ফলে এ সব সেট ব্যবহার করা যাবে না।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এক জুলাই থেকে হ্যান্ডসেট কেনার আগে গ্রাহককে একটি নম্বরে মেসেজ দিয়ে জেনে নিতে হবে সেটটি বৈধ না অবৈধ। তবে কোন নম্বরে মেসেজ করে বিষয়টি জানা যাবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান বিটিআরসির এই পরিচালক।’

এদিকে, বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং ) জাকির হোসেন খান বলেন, ‘৩০ জুন পর্যন্ত গ্রাহকের থাকা অর্থাৎ যেসব ফোন গ্রাহকরা এখন ব্যবহার করছে সেসব হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর এনইআইআর ডাটাবেজে যুক্ত হবে। এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জুলাই থেকে বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়া বাজারে থাকা কোন সেট ব্যবহার করা যাবে না।’

এর আগে বিটিআরসি জানিয়েছিল, দেশে বন্ধ হতে যাচ্ছে ক্লোন বা নকল আইএমইআই সংবলিত মোবাইল ফোন। ‘ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)’ প্রযুক্তি স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সেইসঙ্গে ক্রেতাদের আইএমইআই যাচাই করে নতুন সেট কেনার পরামর্শ দিয়েছিল সংস্থাটি।

বিটিআরসি আগে জানিয়েছিল, নতুন মোবাইল ফোন কেনার সময় মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে ১৬০০২-তে পাঠাতে হবে। মোবাইল ফোনের বক্সে বা প্যাকেটে প্রিন্টেড স্টিকার থেকে অথবা *#০৬# ডায়াল করার মাধ্যমে তাৎক্ষকিভাবে সংশ্লিষ্ট ফোন সেটের আইএমইআই জানা যায়।

প্রযুক্তিটি চালু হলে অবৈধ মোবাইল ফোনে প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট একটি সিম ছাড়া অন্য কোনো সিম কাজ করবে না। এমনকি পরবর্তী সময়ে কোনো সিমই কাজ করবে না ওই ফোন সেটে। এতে গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই অবৈধ ফোন ব্যবহার বন্ধ করবেন। অবৈধ মোবাইল আমদানি বন্ধ, চুরি, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।