জগন্নাথপুরে উপ-নির্বাচন: ইভিএমে ভোট নিয়ে শঙ্কায়

জগন্নাথপুরে উপ-নির্বাচন: ইভিএমে ভোট নিয়ে শঙ্কায়

কাল (২৫ মে) বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন। সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে গতকালমঙ্গলবার মধ্যরাতে। সবকটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৮৯টি। 

এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নুরুল ইসলাম; জাতীয় পার্টির আতাউর রহমান; জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের মনোনীত আব্দুল কাইয়ুম কামালী সিতু; যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হারুন রাশীদ এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সৈয়দ তালহা আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সর্বশেষ গত ২ নভেম্বর জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রবাসী ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকমল হোসেন বিজয়ী হন। পরে ২৬ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন মারা যাওয়ায় উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

এদিকে নির্বাচনে ভোটারদের মধ্য তেমন কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ভোটারদের মধ্যে এক ধরণের নিরবতা বিরাজ করছে। বিশেষ করে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে চলছে নানা ধরনের আলোচনা। অনেক ভোটার এখনো এর ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না বলে দাবি করেছেন। অনেকে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। অনেকে অনিয়মের আশঙ্কা করছেন। আর কেউ এর সুবিধার কথা জানিয়ে বলছেন, ভোট দিতে সময় কম লাগবে। সব মিলিয়ে রয়েছে নানা শঙ্কা।

স্থানীয় ৬ নং জগন্নাথপুর ওয়ার্ডের ভোটার ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘গত নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে ভোট কর্মকর্তারা আমাকে বলেন আমার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। আমার দেওয়া লাগবে না। তো এবার ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কি ভোট দিতে পারবো।’

একিই ওয়ার্ডের বয়োবৃদ্ধ মহিলা ভোটার জয়বান বিবি বলেন, ‘গত নির্বাচনে আমি ভোট দিতে যাই ইভিএম মেশিনে ৭-৮ বার চেষ্টা করেও ভোট দিতে পারিনাই। পরে ভোট কর্মকর্তারা বলেন আমার আঙুলের চাপ নাকি ইভিএমের মেশিন নিচ্ছে না আমার ভোট তারা দিয়ে আমাকে বাড়ীতে চলে যেতে বলেন। তাহলে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কি লাভ।’ 

এ নির্বাচনে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নেওয়ায় ‍উৎসবহীন হয়ে পড়েছে জানিয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু হুরায়রা ছাদ মাস্টার বলেন, ‘অবৈধ হাসিনা সরকারের অধীনে বিএনপি কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। আমাদের নেতা কর্মীরা ও সমর্থক গন ও ভোট কেন্দ্রে যাবেনা। আমরা জনসাধারণ কে এই ভোট ডাকাত সরকারের অধীনে সকল  নির্বাচনে অংশ গ্রহন থেকে জনগনকে বিরত থাকার উদাত্ত আহবান জানাই।’

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন উৎসবমূখর হয়ে উঠেছে। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।

আর সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী তালহা আলম। মঙ্গলবার বিকেলে জগন্নাথপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রিসাইটিং কর্মকর্তারা ১০ ভাগ ভোট দিতে পারে, এই ভোট নির্বাচনে জয় পরাজয়ের প্রতিবন্ধক। কারচুপির মাধ্যমে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবার যাতে জয় ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিরক্ষা গ্রহণ করেছি।

সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ হবে।