বালাগঞ্জে ভাড়াটে লোক নিয়ে স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তাণ্ডব : হতবাক এলাকাবাসী

বালাগঞ্জে ভাড়াটে লোক নিয়ে স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তাণ্ডব : হতবাক এলাকাবাসী

আল আমীন ও তার স্ত্রী নাজমিন আক্তারের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ও কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে স্ত্রী নাজমিন তার পিত্রালয়ে চলে যান। থানা পুলিশের কাছে স্বামীর বিরুদ্ধে করেন নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ। লিখিত অভিযোগ দাখিলের পরদিন থানার একজন পুলিশ অফিসার অভিযোগের তদন্তে আল আমীনের বাড়িতে যান। ঠিক এই সময়ে নাজমিন দুটি স্টিলের নৌকায় করে তার পিতা-মাতা ও ১৫-২০জন লোক নিয়ে আল আমীনের বাড়িতে গিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১২জুলাই সন্ধ্যার পর বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে বন্যাকালীন সময়ের এই ঘটনায় এলাকাবাসীও রীতিমত হতবাক। এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ভিডিও ফুটেজে ঘটনাস্থলে এসআই জাকিরকে দেখা গেছে। পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটিয়ে পুলিশকেও বিতর্কিত করা হয়েছে। এরপর ১৬জুলাই নাজমিনের দাখিল করা অভিযোগটি যৌতুক ও নারী নির্যাতনের ধারায় মামলা হিসেবে রুজু করে থানা পুলিশ। মামলায় আল আমীনসহ তার বৃদ্ধ পিতা, এক চাচা ও এক চাচাতো বোনকে অভিযুক্ত করা হয়। ২৭জুলাই অভিযুক্তরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আল আমীন একটি এনজিও সংস্থায় শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। আট বছর আগে বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের মুসলিমাবাদ গ্রামের ময়নুল ইসলামের মেয়ে নাজমিন আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। এই দম্পত্তির ঘরে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। 

এদিকে, বন্যাকালীন সময়ে শ^শুর বাড়িতে রাখা আল আমীনের মোটর সাইকেলটি তার শ^শুর বাড়ির লোকজন লাপাত্তা করে দিয়েছেন। মোটর সাইকেল উদ্ধার এবং বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আল আমীন বাদী হয়ে ২১জুলাই সিলেটের সংশ্লিষ্ট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আল আমীনের স্ত্রী নাজমিনসহ তার পিতা ময়নুল ইসলাম, মাতা জোসনা বেগম, বোন নাদিয়া আক্তার এবং তাদের স্বজন নজরুল ইসলাম, সুমন ও দ্বারা বেগকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে নাজমিন ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আল আমীনের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করেন। ঘরে থাকা মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে নৌকায় করে নাজমিনের পিত্রালয়ে নিয়ে যান। তখন আল আমীন কিংবা তাদের বাড়ির কোনো পুরুষ লোক বাড়িতে ছিলেন না। এসময় আল আমীনের বৃদ্ধ পিতা মবশ্বির আলীকে মারধর করে আহত করা হয়। ভিডিও ফুটেজে ঘটনার সত্যতা মিলেছে, মামলার নথির সাথে আদালতের কাছে এই ফুটেজ দাখিল করা হয়েছে। 

আল আমীন বলেন, আমার স্ত্রী নাজমিন বেপরোয়া, অশৃঙ্খল ও বেপর্দায় চলাফেরা করে সে আমার কোনো কথাবার্তা শুনে না। তার পিতা-মাতার সমর্থন থাকায় সে এসব অন্যায় আচরণ করার সাহস পেয়েছে। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাকে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু উল্টো সে আরো ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। এ বিষয়ে নাজমিন আক্তারের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোতাহীর আলী বলেন সংশ্লিষ্ট আদালত আল আমীনের দাখিল করা মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। নাজমিনের দাখিল করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বালাগঞ্জ থানার এসআই রাহুল রায় জনি বলেন বাদীর লিখিত অভিযোগের প্ররিপ্রেক্ষিতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে, তদন্ত শেষ হলে প্রতিবেদন দেয়া হবে। 

জাগোসিল/ইশা