সিটি নির্বাচন নিয়ে তৎপর আ. লীগ নেতারা

সিটি নির্বাচন নিয়ে তৎপর আ. লীগ নেতারা
নির্বাচন নিয়ে আগাম তৎপরতা শুরু

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এখনও বছর দেড়েক বাকি। তবুও নির্বাচন নিয়ে আগাম তৎপরতা শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দলীয় ফোরামেও  এ নিয়ে চলছে আলোচনা। দলটির একাধিক নেতাই মেয়র প্রার্থী হতে আগ্রহী। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছেন সিক্রয়ভাবে।

দলীয় প্রার্থী হতে ইতোমধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এবং প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ছেলে ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আরমান আহমদ শিপলু। এদের মধ্যে শিপলু ছাড়া বাকী তিদনজনই গত সিটি নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, প্রয়াত বদরউদ্দিন আহমদ কামরান আগের সবকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে অনেকটা ‘অটো চয়েস’ ছিলেন। এখন কামরান বেঁচে নেই। তাই বিকল্প প্রার্থী খুঁজতে হচ্ছে দলকে।

সাবেক মেয়র কামরান করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ১৫ জুন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০০২ সালে পৌরসভা থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর প্রথম দুই দফা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন এই সভাপতি। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীও ছিলেন। সর্বশেষ সম্মেলনে মহানগরের সভাপতিত্ব হারালেও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন তিনি।

সুত্র জানায়, আগামী সিটি নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী হবার জন্য সবছেয়ে বেশী এগিয়ে থাকবেন যার ক্লিন ইমেজ ও সবার কাছে গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। কারণ গেল নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার পরও অনেকটা দলীয় কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। এবার কোন্দন আর ভেদাভেদ ভুলে নগর ভবনের মসনদে দলীয় প্রার্থীকে বসাতে সবাই এক হয়ে কাজ করতে ইতিমধ্যে আলোচনা চালচ্ছন সিলেট আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। আর মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও দলের হাই কমান্ডের নজর কাড়তে ব্যস্ততা বাড়িয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের অনুসারীরাও বেশ সরব।

দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, এবারও দলের মনোনয়ন চাইবো। আমি সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত আছি। দলের মূল্যায়ন করলে আমি সফল হতে পারবো। নগরের বর্ধিত অংশের সাথেও আমার ভালো যোগাযোগ আছে। নিয়মিতই আমি এসব এলাকায় যাতায়াত করছি।

মেয়র পদে প্রার্থী হতে আগ্রহের কথা জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন জানান, গত নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে  বৃহত্তর পরিসরে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী চাইলে আমি জনগনের সেবা করতে চাই।

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও নগরের ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছি। আশা করছি দল এবার আমাকে মূল্যায়ন করবে।

কামরান পুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সিলেটের মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। আজীবন বঙ্গবন্ধুর আর্দশের কর্মী ছিলেন। বাবার মতো সিলেটের মানুষের সুখে দুখে কাছে থাকার চেষ্টা করছি। সুযোগ পেলে আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাবো।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী সঙ্কট আছে। কামরান ভাইয়ের বিকল্প নেই, তবুও যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে আমাদের দল। দলীয় হাইকমান্ড এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে। বিভিন্ন জরিপে যিনি এগিয়ে আছেন তাকেই দল থেকে মনোনীত করা হবে।’

প্রসঙ্গত- সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে কামরানকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ভোটের ব্যধানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।