আবার আগুনের ভয় ঢুকেছে মানুষের মধ্যে
গত ২৭ ঘণ্টায় ৭টি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া এ সময়ে ৪টি কাভার্ড ভ্যান ও ২টি ট্রাকেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।
বিএনপি-জামায়াতের তৃতীয় দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, রাস্তায় জ্যাম দেখে অফিসগামী যাত্রীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্যাটায়ার করে লিখেছেন- কোথায় অবরোধ? অবরোধের যেন অর্থ বদলে গেছে।
গত সপ্তাহের অবরোধে মানুষ একদমই বের না হলেও তৃতীয় দফার অবরোধ শুরুর দিনে বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় যান চলাচল ছিল প্রায় স্বাভাবিক। সকাল থেকেই যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি অটোরিকশা, রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল, পণ্যবাহী পিকআপ চলাচল করছে। এমনকি বুধবার সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কিছু বাসও ছেড়ে গেছে। তবে বরাবরের মতো ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল কম। বৃহস্পতিবারেও বাস প্রস্তুত আছে। আগুনের ভয়ে যাত্রী না আসায় বাস ছেড়ে যেতে পারেনি। তবে দিনের দ্বিতীয় ভাগে প্রায় সব বাস ছেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মালিকরা।
বিভিন্ন এলাকায় কাজে যোগ দেওয়া মানুষ বলছে, দিনের পর দিন অবরোধ দিয়ে এখন মাঠ গরম করা যাবে না। মানুষ এখন এসব মানবে না। কাজ না করলে খাবে কি? আপনার আন্দোলনে যাদের সমর্থন আছে তারাও এধরনের কর্মসূচি চায় না। পরিবহন মালিকরা বলছেন, আগুনের ভয়ে বাস চলছে না। নাহলে কিছুই বন্ধ থাকতো না।
বাসে গাড়িতে আগুনের ঘটনা না থাকলে কিছুই বন্ধ থাকতো না উল্লেখ করে রাজধানীর ভেতরের রুটের একাধিক পরিবহনের বাসের সহকারীরা বলছেন রোজ সকালে অনেক মানুষ অফিস যায়। অবরোধ মানার কোনো কায়দা নাই তাদের। কিন্তু বাসে উঠছে না। বাসে ওঠা আতঙ্ক হয়ে গেছে, কখন কোথায় আগুন লাগিয়ে দেয়। আমাদের এভাবে চলবে কী করে? বসে থাকলেতো না খেয়ে মরতে হবে।
ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সবসময় পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেয়েছি। কিন্তু যাত্রী না পেলে বাস ছাড়বো কীভাবে। এরকম সহিংসতা, বাসে আগুন দিলে যাত্রীরা কোন সাহসে আসবে? এধরনের কর্মসূচিতে অর্থনৈতিক ক্ষতি, এটা দলগুলোকে বিবেচনায় নিতে হবে॥
উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াতের ডাকে প্রথম দফায় গত ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ পালন করা হয়। এরপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি ছিল। বর্তমানে তৃতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে। এসময়ে অর্ধশতর বেশি বাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে।