অবরোধ-হরতালের বিরুদ্ধে শিল্পী সমাজের মানববন্ধন
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির ডাকা অবরোধে দেশের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তথ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশের শিল্পী সমাজ। মানববন্ধনে বক্তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখার আহবান জানান।
শনিবার হরতাল-অবরোধের বিরুদ্ধে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ''ধ্বংসের বিরুদ্ধে শিল্পীসমাজ'' ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন উপস্থিত হয়ে তারা এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘আমার বাচ্চারা আজকে বন্ধের দিনে পরীক্ষা দিচ্ছে। এই অবরোধের কারণে তারা অনলাইন ক্লাস করছে। বাচ্চারা যখন এ বিষয়গুলো জানতে চায় আমরা উত্তর দিতে পারি না। তারা ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠছে। আজকালের শিক্ষার্থীরা হরতাল অবরোধ চায় না কারণ স্মার্ট হিসেবে গড়ে উঠছে। বর্তমান সরকারের দোষ কি? তিনি পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করেছে? এগুলো কারও দোষ হলে আমরা সেই দোষীর পক্ষেই রয়েছি। তাই আগামী নির্বাচনে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে জয়ী করতে চাই।’
এসময় অভিনেত্রী নিপুন বলেন, ‘শেখ হাসিনাতেই আমার আস্থা। আমি অভিনেত্রী থেকে নারী উদ্যোক্তা হয়েছি শেখ হাসিনার কারণেই। আজকে যারা নারী উদ্যোক্তা হয়েছে, তারা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই হয়েছে। কারণ তিনি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কোনো ভ্যাট রাখছেন না। আপনারা যারা হরতাল অবরোধ দিচ্ছেন, যার কারণে আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আপনাদের কাছে আমাদের প্রশ্ন-আপনারা কি আবারও হরতাল অবরোধে অস্থিতিশীল দেশ চান? আমরা কোভিডের সময়ও ব্যবসায় এতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হইনি,যতটা এই হরতাল অবরোধের কারণে হতে হচ্ছে। তাই আমি বলবো,আমার মেয়ের নিরাপত্তার জন্য সামনের ৭ই জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।’
অভিনেতা রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আজকে আমাদের টেলিভিশনের পর্দায় থাকার কথা থাকলেও আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। এর কারণ হলো আজকে বিএনপি যেই নৃশংসতা সৃষ্টি করেছে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। তারাই ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা করেছে। তারাই আজকে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। পুলিশ বাহিনীর উপর হামলা করছে। হাসপাতাল, এম্বুলেন্সে হামলা করছে। তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করছে। তাদের এই নৃশংসতা দেশাদ্রোহীতার শামিল বলে মনে করি ‘
চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহী বলেন, ‘আমরা চাই না আর কোনভাবে বিএনপি এদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করুক। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আছি, শিল্পী সমাজ আজকে এই সহিংসতার বিরুদ্ধে রয়েছে।’
শমী কায়সার বলেন, ‘শহীদ পরিবার আজ মাথা তুলে দাঁড়াতে পেরেছে। আমরা দেখেছি এক সময় তাদেরকে এই দেশে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। বাংলাদেশের শিল্পী সমাজ সব সময় সত্যর পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তারা সত্যকে লালন করে সত্যের জন্য কথা বলেছে, আর সেই সত্যিটি হলো মুক্তিযুদ্ধ। সবাই বলে সংলাপ করেন। কিন্তু যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, স্বাধীন রাষ্ট্রে যারা বিশ্বাস করেনি, স্বাধীন রাষ্ট্রের বিপক্ষে যারা ছিলো, তাদের সাথে বসে কখনো দেশ বিনির্মানের গল্প হয় না ‘
অভিনেত্রী তারিন জাহান বলেন, ‘আমি এদেশের নাগরিক এবং একজন শিল্পী। একজন নাগরিক হিসেবে আমার চাহিদা দেশের উন্নয়ন, আমার নিরাপত্তা। সেটি কে নিশ্চিত করছে তা বোঝার যথেষ্ট বোধ আমার রয়েছে। আমরা দেখছি একটি দেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-চেতনা নিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি আরেকটি দল বলছে জনগণের জন্য রাজনীতি করছে,কিন্তু অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনগণের জান-মালের ক্ষতি করছে,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের পুড়িয়ে মারছে ‘
নির্মাতা গুলজার আহমেদ বলেন, ‘জনগণের জান মাল ধ্বংস করে মানুষের পেটে লাথি মেরে কিভাবে আন্দোলন করে। বিএনপি বলে তারা না-কি জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করে৷ অথচ তারা দিনে আনে দিনে খায় এমন শ্রমিকদের বাসে আগুন দেয়। বিদেশিদের এজেন্ডা বাস্তয়নেই কাজ করছে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন অভিনেত্রী জোতিকা জ্যোতি, মুক্তিযোদ্ধাযোদ্ধা বিচ্ছু জালাল, অভিনেত্রী শম্পা রেজা, দিলারা হক, তানবীর সুইটি, অভিনেতা তুষার খান, ধ্রুব গ্রহ,এসডি রুবেল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা ও পরিচালক সালাউদ্দিন লাবলুসহ অনেক শিল্পী ও পরিচালক।