ঈদের দিনে বজ্রপাতে সিলেটের ২ জনসহ সারাদেশে নিহত ৯

ঈদের দিনে বজ্রপাতে সিলেটের ২ জনসহ সারাদেশে নিহত ৯

ঈদুল ফিতরের দিনে (মঙ্গলবার, ৩ মে) সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জের দুইজনসহ সারাদেশে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে টাঙ্গাইলে একই স্থানে দুই কিশোরসহ ৩ জন, হবিগঞ্জে ২ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাট, মেহেরপুর ও কক্সবাজারে একজন করে মারা গেছেন।

হবিগঞ্জ  জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে শাহজাহান মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের শাহজাহান মিয়া বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার লাদিয়া গ্রামে মারুফ মিয়া (৭) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। বিকেলে বাড়ির পাশে খেলা করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা যায় সে। শায়েস্তাগঞ্জ সদর ই্উনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বুলবুল খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়া, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় মঙ্গলবার বজ্রপাতে দুই কিশোরসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। উপজেলার হাতিয়া এলাকায় আজ সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কিশোর হলো হাতিয়া দক্ষিণপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে রাকিব (১৪), দশাকিয়া ভাড়ারিপাড়া এলাকার জুলহাস মিয়ার ছেলে ফয়সাল (১৩), অপরজন আরিফুল (২৮)। আরিফুল হাতিয়া দক্ষিণপাড়া এলাকার রাজ্জাকের মেয়ের জামাই বলে জানা গেছে। সকালে নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন তারা। কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বাবার কবর জিয়ারত করার সময় বজ্রপাতে রনি মিয়া (৩৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। সকাল ৯টার দিকে উপজেলা সদরের দুর্গাপুরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রনি ঈদের নামাজ আদায় শেষে বাবার কবর জিয়ারত করতে স্থানীয় একটি কবরস্থানে যান। কবর জিয়ারত করা অবস্থায় বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মোংলায় ঈদের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার আগা মাদুরপাল্টা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার অজিত মজুমদার জানান, উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আগা মাদুরপাল্টা গ্রামের বাসিন্দা মহির শেখ (৬৫) সকালে ঢালীরখণ্ড ঈদগাহে নামাজ পড়েন। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জ্বালানি কাঠ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথিমধ্যেই বজ্রপাতের শিকার হন। পরে স্বজনরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেবানন্দ মজুমদার বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

মেহেরপুরে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে আব্দুর রাজ্জাক (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের ছোট ভাই মন্টু মিয়া (৫০)। মঙ্গলবার সকালেমেহেরপুর সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডীতে বজ্রপাতে শামসুল আলম (৫০) নামে এক লবণচাষির মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, বিকেলে চৌফলদণ্ডী নতুন মহাল মাঝেরপাড়ায় বৃষ্টির কবল থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে হঠাৎ বজ্রপাতের কবলে পড়েন শামসুল আলম। তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সেখান থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।