ক্ষত-বিক্ষত বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়ক: দিগুণ ভাড়া আদায়, যাত্রী দুর্ভোগ

ক্ষত-বিক্ষত বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়ক: দিগুণ ভাড়া আদায়, যাত্রী দুর্ভোগ

বন্যায় ক্ষত-বিক্ষত বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কটি জরুরি সংস্কার বা মেরামত না করায় জনদুর্ভোগের অন্ত নেই। বড়বড় গর্ত আর ভাঙাচুরা সড়কে প্রতিনিয়তই যাত্রী সাধারণ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বেহাল সড়কটি মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্বহীন ভূমিকা পালন করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন। সড়কে যাত্রী দুর্ভোগ নিয়ে সম্প্রতি জাগো সিলেটে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর দীর্ঘ সড়কটি মেরামতে মাত্র চার হাজার ইট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দু’একটি গর্তে যত্রতত্র যৎ সামান্য ইট ফেলে রাখায় যান চলাচলে বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের তাজপুর কদমতলা থেকে বালাগঞ্জ উপজেলা সদর পর্যন্ত এই সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ওসমানীনগর অংশে প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই বেহাল। যাত্রী সাধারণ ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বন্যার পানি নামার পরও ক্ষতিগ্রস্থ সড়কটি মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃক্ষ কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছেন না। সড়কের গর্তে ইটগুলো ভেঙে কংক্রিট করে না ফেলে খামখেয়ালিপনা করে দায়সারাভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। তাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বেড়েছে। সড়কটি ভেঙে যাওয়ার কারণে পানি নামার পরও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রী সাধারণের চলাচলে সিএনজি অটোরিকশাই ভরসা। ভাঙা সড়কের অজুহাতে চালকরা দিগুণ ভাড়া আদায় করছেন, চলাচলে সময়ও বেশি লাগছে।

পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের স্থানীয় নেতারা অভিযোগ করে বলেন, বন্যাকালীন সময়ে অনেক টাকা ব্যয়ে কংক্রিট ও পাথর বস্তায় ভরে সড়কের বড় গর্তগুলো ভরাট করা হয়েছে। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে সবাই দেখেছেন। কিন্তু সিলেট জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এনামুল কবীর গণমাধ্যমে মিথ্যাচার করে বলেছেন তার উদ্যোগে নাকি সড়কের গর্ত ভরাট করা হয়েছে। কৃতিত্ব দেখানোর তার এধরনের মিথ্যা বক্তব্য ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু নয়। তারা তো মানুষের কষ্ট বুঝবেন না। এই সড়কে চলাচলকারী মানুষ এতোটাই ভোগান্তির শিকার হলেও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ভ্রক্ষেপ নেই। 

জানা গেছে, এই সড়ক দিয়ে বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় একাধিক স্থানে সড়কের উপরে অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ ভেঙে পড়েছে। আরও কয়েকটি স্থানে হয়েছে বিশাল আকৃতির গর্ত। সড়কের ওসমানীনগর অংশে আলীপুর, লামাপাড়া ও পাঁচপাড়া এলাকাসহ আরো কয়েকটি স্থানে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদিকে, বালাগঞ্জ থেকে তাজপুর পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া ছিল ৩০টাকা। যা দূরত্বের তুলনায় ভাড়া অনেকটাই বেশি ছিল। বন্যা পরবর্তী সময়ে ভাঙা সড়কের অজুহাতে সিএনজি অটোরিকশা চালকরা ভাড়া আদায়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। যাত্রীদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা এমনকি ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

সিলেট জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এনামুল কবীর মুঠোফোনে বলেন চার হাজার ইট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে কয়েকটি গর্ত ভরাট হওয়ার তো কথা না। গর্তগুলো এতোই বড় দুই গর্তেই চার হাজার ইট লাগবে এই কথার ব্যাখ্যা না দিয়ে তিনি বলেন বরাদ্দ যা মিলেছে তা দেয়া হয়েছে। 

জাগোসিল/ইশা