ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন শিপলু

ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন শিপলু

ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন সিলেট মহানগরীর পশ্চিম পাঠানটুলা এলাকার বাসিন্দা রানা আহমদ শিপলু। এমন অভিযোগ করেছেন একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. তানভীর আহমদ (৩৮)। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তানভীর জানান, তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এলাকায় বিভিন্ন সময় সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে পশ্চিম পাঠানটুলার আলী আকবরের ছেলে রানা আহমদ শিপলু (৩৫) প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ান। এছাড়াও এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়ান শিপলু। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ আগস্ট পাঠানটুলার গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলে দুই তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠে শিপলুসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলাও করেন ওই দুই তরুণী। কিন্তু ধর্ষণ মামলায় ফেঁসে গিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে বাঁচতে চাচ্ছেন শিপলু। সেই লক্ষ্যে গত সোমবার (৫ আগস্ট) শিপলুর স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের ধর্ষণকাণ্ড ‘সাজানো নাটক’ উল্লেখ করে এর নেপথ্যে তানভীর রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু শিপলুর স্ত্রীর এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন তানভীর।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২৩ আগস্টের গণধর্ষণকাণ্ডের মামলার আসামি তানিয়া ও ভিকটিম দুই তরুণীর সঙ্গে তার কোনো যোগসাজশ নেই। তিনি এদের কাউকে চিনেন না। মামলার আসামি জুবেলের সঙ্গেও তার কোনো আঁতাত নেই।

সংবাদ সম্মেলনে তানভীর আরও জানান, তিনি কখনোই ছাত্রদল বা যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। বরং শিপলু নিজেকে যুবলীগ কর্মী দাবি করলেও মূলত তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার আপন বড় ভাই বিএনপির পদবীধারী নেতা। তবে তানভীর দাবি করেন- তিনি আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর শিপলুর স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে তানভীরের একাধিক মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তানভীর সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন- সংবাদ প্রকাশ সূত্রে তিনি জানতে পেরেছেন, ওই দুটি গণধর্ষণ মামলার আসামি মোহাইমিন রহমান রাহি গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এর অর্থ হলো- শিপলুসহ সকল আসামি এমন কাণ্ড ঠিকই ঘটিয়েছেন।

গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের ধর্ষণকাণ্ডের আসামি শিপলু নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে তানভীর আরও বলেন- শিপলু এর আগে বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছেন। কারাবাসও করেছেন। তার বিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় ছিনতাই, গাড়ি চুরি, অস্ত্র আইন, খুন ও জায়গা দখলের মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিপলু এই গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলে দিন-রাত অবস্থান করে নানা অপকর্ম চালিয়ে যান। তিনি অপকর্ম করতে হলে তার কোনো রুম বুক করতে হয় না, রেজিস্ট্রার খাতায় নাম লিখাতে হয় না। তার হয়রানির শিকার হয়ে গ্রিন হিল হোটেল কর্তৃপক্ষও বিরক্ত ও অতিষ্ট। এছাড়াও শিপলু বিভিন্ন নারী দিয়ে সিলেটের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কৌশলে ফাঁসিয়ে মুঠোফোনে ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া বা মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। এসব কাণ্ডে স্থানীয় কয়েকজন অশৃঙ্খল এবং সন্ত্রাসী যুবক তাকে সহযোগিতা করেন। গ্রিন হিল হোটেলকে শিপলু তার সকল অপকর্মের অলিখিত আস্তানা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এই হোটেল কর্তৃপক্ষ তার ভয়ে কিছু বলতে না পেরে বিপাকে আছেন।

এ অবস্থায় শিপলুর অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে তার সকল অপকর্মের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তানভীর। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের সুদৃষ্টি এবং সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।