নৌপথে অপহরণে অংশ নেয় ১৬ সদস্য, দুই স্পিডবোট জব্দ

নৌপথে অপহরণে অংশ নেয় ১৬ সদস্য, দুই স্পিডবোট জব্দ

চাঁদাবাজি ও হাওড়ের জেটি থেকে তিন ব্যক্তিকে অপহরণের সময় ব্যবহৃত দুটি স্পিডবোট জব্দ করেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশ। উপজেলার নতুন রতনশ্রী’র বৌলাই নদী তীর থেকে স্পিডবোট দুটি জব্দ করা হয় শনিবার ।

ওইদিন বিকালে মামলার আলামত হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. জাহাঙ্হীর হোসাইন দুটি স্পিডবোট জব্দ মূলে প্রতিবেদন দাখিল করেন সুনামগঞ্জ চিফ জুডিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তাহিরপুর-জোন) আদালতে।

এরপর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল ইসলামের কাছে স্পিডবোটের দুই চালক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা জানিয়েছেন, হাসান নামে এক স্পিডবোট চালক বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করে স্পিডবোট দুটি ভাড়া করেন।

এরপর উপজেলার উত্তর শ্রীপুরের সংসার হাওড় তীরে মন্দিয়াতা গ্রামে কাজে যাতায়াতের কথা বলে গড়কাটি ও মোদেরগাঁও গ্রাম থেকে স্পিডবোট দুটিতে ১৬ ব্যক্তি উঠেন। রাত সাড়ে ১১টায় বিআইডব্লিউটিএর জেটি থেকে মারপিট করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তিন ব্যক্তিকে অপহরণ করে মোদেরগাঁও গ্রামে ফিরে আসেন তারা।

তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, ঘটনার রাতে অপহরণের সময় নৌপথে ব্যবহৃত স্পিডবোট দুটি মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়ছে।
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সুমন মিয়া বলেন, চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় পলাতক আসামিসহ যাদের সম্পৃক্ততা তদন্তে পাওয়া যাবে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের একাধিক টিম তৎপর রয়েছে।

মামলা ও পুলিশ সূত্র জানায়, ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে না পাওয়ায় দুটি স্পিডবোটযোগে ১৪ থেকে ১৫ জনের একটি দল বুধবার রাতে তাহিরপুরের সংসার হাওড়ের বিআইডব্লিউটির জেটি থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যবসায়ীসহ তিন ব্যক্তিকে অপহরণ করে। তাদের ওপর রাতভর শারীরিক নির্যাতন করা হয়। প্যাড ও সাদা কাগজে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

অপহরণের শিকার তিনজন হলেন- সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মৃত রাজা মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী অলিউর রহমান, ধর্মপাশা উপজেলার দিগজান গ্রামের মানিক তালুকদারের ছেলে বায়জিদ তালুকদার ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রঙ্গীয়ার চর গ্রামের নিরামন দাসের ছেলে সুদীপ দাস। অপহরণের বিষয়টি জানাজানি হলে ওই তিন ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার ভোরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মোর্শেদ আলম ও তার তিন সহোদরসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আর ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মৃত রাজা মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী অলিউর রহমান মামলাটি করেন।

বৃহস্পতিবার রাতেই তাহিরপুরের লাউরগড় সীমান্তের সাহিদাবাদ থেকে মামলার পলাতক আসামি মোর্শেদ আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।