বালাগঞ্জে অধিকাংশ সরকারি অফিস খোলে না নির্ধারিত সময়ে

বালাগঞ্জে অধিকাংশ সরকারি অফিস খোলে না নির্ধারিত সময়ে

বিদ্যুৎসাশ্রয়ের লক্ষ্যে কর্মঘণ্টা কমিয়ে সরকারি ও আধা সরকারি অফিস সময়সূচি সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত করেছে সরকার। কিন্তু সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় সরকারের দেওয়া সময়সূচি ও নির্দেশনা মানা হচ্ছে না অনেক অফিসে। সপ্তাহ শুরুর দিন, অর্থাৎ গত রোববার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত সরকারি  অফিসগুলোতে ঘুরে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, পরিসংখ্যান অফিস, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, আনসার ভিডিপি কার্যালয়, মডেল রিসোর্স সেন্টার, পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে অনিয়ম দেখা গেছে। সকাল ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অফিসগুলোর দরজায় তালা ঝুলছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কয়েকজন উপকারভোগী বলেন, ১০টায় খোলে নির্বাচন অফিস। আমরা সাড়ে আটটায় এসেছি। নির্ধারিত সময়ের পরে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন অফিসে আসেননি সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সরকার সব দরজা-জানালা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে বললেও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে খালি কক্ষে বাতি ও ফ্যান চলতে দেখা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী জানান, সব নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য। অফিস প্রধানেরা আসেন সাড়ে ৯টা-১০টায়।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার অফিসে জনবল কম, মাত্র দুজন আছি। আমি ঢাকায় যুব প্রশিক্ষণে। আমার স্টাফও একটি প্রশিক্ষণে।’ 
উপজেলা আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমার ফিল্ড লেভেলে কাজ থাকে। জনবলও কম, ফিল্ডে গেলে অফিসে তালা দিয়ে যেতে হয়।’

উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লাকী রানী দে জানান, আটটায় খোলা হয়। নাশতা করার জন্য হয়তো তালা দিয়ে যেতে পারে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বজলুর রশীদ বলেন, ‘সাড়ে আটটায়ও অফিস খোলা হয়নি, বিষয়টি দুঃখজনক। আমি স্টাফদের নির্দেশনা দিয়েছি সকাল আটটার ভেতরে অফিস খোলার জন্য।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রকিব ভুঁইয়া বলেন, তিনি একটা ভাইবা বোর্ডে আছেন। এ বিষয় নিয়ে পরে কথা বলবেন।

উপজেলা মহিলাবিষয়ক প্রশিক্ষক নিপুন বলেন, ‘আমি প্রতিদিন বের হওয়ার সময় ফ্যান ও বাতি বন্ধ করি।’

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হামিদা বলেন, ‘আমরা সরকারের চাকরি করি। সরকারের নিয়মমাফিক চলা আমাদের দায়িত্ব। স্টাফদের বলেছি সকাল আটটার ভেতরে অফিস খোলার জন্য।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সোহরাব আহমেদ জানান, তিনি সিলেট সদর ও বালাগঞ্জের দায়িত্বে রয়েছেন। বালাগঞ্জের ভোটার হালনাগাদের কাজ শেষ হয়েছে, সিলেটে অফিশিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেন না। স্টাফদের বলা আছে আটটায় অফিস খোলার জন্য।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, ‘সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের আগে থেকেও বলা আছে। আবারও বলব, অফিস যেন সকাল আটটার ভেতরে খোলা হয়।’