বিশ্বকাপ থেকে ‘বিদায়’ বাংলাদেশ

বিশ্বকাপ থেকে ‘বিদায়’ বাংলাদেশ

দুঃস্বপ্নের প্রহরও একটা সময় শেষ হয়। অনেক প্রতীক্ষা শেষে হেসে ওঠে সাফল্যের সূর্য। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে যেন অমানিশার অন্ধকার! কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। সেই একই গল্প, প্রবাসী দর্শকরা মাথা উঁচু করে স্লোগানে মুখরিত হয়ে মাঠে আসছেন, আর ম্যাচ শেষে ফিরছেন হতাশ হয়ে। মাঠ পাল্টাচ্ছে, প্রতিপক্ষ বদলে যাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ দল আছে হারের বৃত্তেই। মধ্যপ্রাচ্যের মরুর শহরে এসে চোরাবালিতে ডুবে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। 

সেমি-ফাইনাল থেকে দল ছিটকে গিয়েছিল আগেই। শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও হারল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। মঙ্গলবার আবুধাবির মাঠে ব্যাটসম্যানরা উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিল করলেন শুধু। ব্যাট করতে ভুলেই গেলেন তারা, তারপর আর বোলারদের কী করার থাকে?  বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা। ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে তাদের পয়েন্ট ৯।

আর টানা চতুর্থ হারের ফলে ‘কাগজে কলমে’ টিকে থাকা সেমিফাইনালের আশাটাও শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ দল। সুপার টুয়েলভ থেকে প্রথম দল হিসেবে বিদায় নিলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

আর বাংলাদেশ চার ম্যাচ খেলে মূল পর্বে হেরেছে চারটিতেই। ৪ নভেম্বর বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে টাইগাররা লড়বে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। কে জানে আবার কী অপেক্ষা করছে!

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৮৪ রানে অলআউট বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করে নেমে প্রোটিয়ারা ৪ উইকেট হারিয়ে পা রাখে জয়ের চেনা বন্দরে!

বিচ্ছিরি ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী ছিল শুরুতে। পুরো টুর্নামেন্টে প্রশ্নবিদ্ধ ‘ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ’ এদিন যেন মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। প্রথম বলেই আউট হলেন সৌম্য সরকার ও আফিফ হোসেন। সেটি তারা হতেই পারেন। কিন্তু যেভাবে আউট হলেন, দেখতে সেটি দৃষ্টিকটু হলো ভীষণ। 

তাদেরও যেন ছাড়িয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার আঙ্গুলে লেগে বল ফিল্ডারের হাতে গেল। তিনি কি না টেরই পেলেন না! আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিলেন রিভিউ। তাতে স্পষ্ট দেখা গেল সব, ঠিক থাকল আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। 

বাংলাদেশের পক্ষে বলার মতো সংগ্রহটা এল কেবল লিটন দাসের ব্যাটে। ১ চারে ৩৬ বলে ২৪ রান এল তার ব্যাট থেকে। বাংলাদেশ অবশ্য তাতে লজ্জা এড়াতে পারল না। ৮৪ রানে অলআউট হলো। যেটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।

এই ম্যাচ থেকে কী বাংলাদেশের কোনো প্রাপ্তি আছে? এমন প্রশ্নের উত্তর একটাই তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত স্পেল। ইনসুইং, গতি এমন সব ডেলেভারি করলেন ব্যাটিং ব্যর্থতার আফসোসটা যেন বাড়ালেন আরও। রানটা আরেকটু বাড়লে লড়াইটাও নিশ্চয়ই আরেকটু বেশি হতো!

৪ ওভারে কেবল ১৮ রান দিয়ে দুই উইকেট নিলেন তাসকিন। তাতে অবশ্য কাজের কাজ হলো না। ১৩.৩ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। -ঢাকাপোস্ট