মৌলভীবাজারে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব

মৌলভীবাজারে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব

মৌলভীবাজারে মৌসুমের শুরুতেই জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েকদিনের শীতের তীব্রতায় নাজেহাল মানুষ। দেখা দিয়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব এবং এর মধ্যে বেশিরভাগই আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

সরেজমিনে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে দেখা যায়, হাসপাতালের আন্তঃ ও বহির্বিভাগে ঠাণ্ডার প্রকোপে বিভিন্ন বয়সী রোগীর চাপ বেড়েছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডার প্রকোপে শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে। তবে নির্দিষ্ট পরিমাণে বেডের বিপরীতে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীর স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, বিনামূল্য ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও হাসপাতালের বাহির থেকেই কিনতে হচ্ছে বেশিরভাগ ওষুধ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক চিকিৎসাসহ প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশু ভর্তি হচ্ছে। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শীত মৌসুম শুরুর পর থেকেই হাসপাতালে বাড়তে শুরু করে রোগীদের চাপ।

এদিকে, চার বছরের শিশু পুষ্পা ১০ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। লংলা চা বাগান থেকে আসা শিশুর মা চম্পা কুর্মি বলেন, আমার শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিল, তাকে নিয়ে দশদিন হাসপাতালে রয়েছি। এখন সে অনেকটা সুস্থ। তাই আজ বাড়ি ফিরবো।

সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স জানান, শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীদের সংখ্যা। শিশু ওয়ার্ডে ৫০টি বেডের বিপরীতে ৮০ জনের অধিক রোগী রয়েছেন।

সিভিল‌ সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ জন, এআর‌আইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন। গত এক সপ্তাহে শীতকালীন রোগে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬০০ জন।

এদিকে, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিশ্বজিৎ দেব বলেন, শীতের প্রভাবে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার সাথে সাথে রোগীর চাপও বাড়ছে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জনের মতো শিশু ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই একদিনে আবার কেউ কেউ দুই/একদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে শিশুদের সুরক্ষা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে খালি পায়ে না হাটা, বাইরে কম বের হওয়া, শরীরে ঠাণ্ডা বাতাস না লাগানো, বিশুদ্ধ হালকা উষ্ণ গরম পানি খাওয়া ও গোসল করা, গরম কাপড় ব্যবহার করাসহ অপুষ্টিজনিত শিশুদের তাপযুক্ত স্থানে রাখতে অভিবাবকদের সচেতন থাকতে হবে।