শফিক না আসাদ? কে হবেন সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক!

শফিক না আসাদ? কে হবেন সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক!

শফিকুর রহমান চৌধুরী না আসাদ উদ্দিন আহমদ; কে হচ্ছেন সিলেট জেলা পরিষদের নতুন প্রশাসক? নাকি অন্য কেউ এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে। সারা দেশের মতো সিলেটেও জেলা পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা হবার পর থেকেই এই আলোচনা চলছে। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অন্তত পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। এই তালিকায় আছেন সাবেক সাংসদ থেকে নিয়ে আইনজীবীও।

তালিকায় একাধিক নাম যুক্ত হলেও বেশী করে আলোচিত হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী। তবে তিনি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এজন্য এই পদে তাঁর অনেকটা ‘অনিহা’ রয়েছে।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলাম। সেখানেই কাজ করতে পছন্দ করি। তবে আমি আমাদের নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সিদ্ধানের উপর অটল। তিনি যেই দায়িত্ব আমাকে দিবেন আমি সেই মেনে নিবো।’

শফিকুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও আলোচনায় যারা আছে তারা হলেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ ও বিজিত চৌধুরী।

এদিকে, প্রশাসক পদে শফিকুর রহমান চৌধুরীর পর বেশি করে নাম উচ্চারিত হচ্ছে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিনের নাম। আসাদ উদ্দিন এর আগে সিলেটে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বশীল বৃহৎ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক পদে দায়িত্ব পালন করেন।

আসাদ উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি একান্তই সরকারের। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রধানই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্বান্ত গ্রহণ করবেন। জেলা পরিষদে দল যাকে যোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করবে, তাকেই প্রশাসক পদে আসীন করা হবে। এ বিষয়ে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই।’

আলোচনায় থাকা আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দীন আহমদ একসময় জেলার রাজনীতি করেছেন। ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এই অভিজ্ঞতার আলোকে তাকে জেলা পরিষদের প্রশাসক পদ দেওয়া হতে পারে বলেও আলোচনা রয়েছে।

 এছাড়াও এ বিষয়ে আলোচনায় রয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বিজিত চৌধুরী। তিনিও সিলেট চেম্বারের নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিজিত চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগীদের মূল্যায়ন করেন সবসময়। আমি দীর্ষদিন দলের হয়ে কাজ করছি। রাজনীতির বাইরেও আমি বিভিন্ন সংগঠনের হয়ে কাজ করেছি।’

সিলেট জেলা বারের আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন বলেন, জেলা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এবং পরবর্তী পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত সরকার একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে বা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্তকোনো কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে। জেলা পরিষদ আইনের ৮২ ধারার ০২ উপধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। ফলে সরকার যে কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, সিলেট জেলা পরিষদের প্রথম প্রশাসক মনোনীত হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। সুফিয়ান চৌধুরী ২০১১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব লাভ করেন। ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করলে ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই সিলেট জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকের দায়িত্ব লাভ করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। পরবর্তীতে শুন্য পদে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান সিলেট জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হন।