শ্রীমঙ্গলে চেয়ারম্যানের হাতে দিনমজুর প্রহৃতের অভিযোগ

শ্রীমঙ্গলে চেয়ারম্যানের হাতে দিনমজুর প্রহৃতের অভিযোগ

সোলেমান আহমেদ মানিক, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২নং ভুনবীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক এক দিনমজুর প্রহৃত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় ও ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে অন্য প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করায় হামলার ঘটনা বলে দাবি করেছেন প্রহৃত দিনমজুর।
অপরদিকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের দাবি ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত । দিনমজুর মোশারফ মিয়া এলাকার মসজিদে যাতায়াতের রাস্তা কেটে ফেলায় তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন কেন রাস্তা কেটেছে। এর বেশি কিছু নয়। এখানে মারধরের কোন ঘটনা আদৌ ঘটেনি।
শ্রীমঙ্গল ২নং ভুনবীর ইউনিয়ন পরিষদের শাসন ইলামপাড়া গ্রামের দরিদ্র  দিনমজুর মোশারফ মিয়া (৪৫) এলাকার জনৈক মো. আছদ্দর আলীর মালিকানাধীন লেবু বাগানের শ্রমিকের কাজ করেন। ২ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক মোশারফ স্থানীয় ইলামপাড়া মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতিসহ নানা সমাজ কল্যাণমূলক কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ভুনবীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার তার দুই সহযোগিসহ গত ২৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ তার বাড়িতে এসে পুত্র-কন্যাসহ পরিবারের সদস্যদের সামনেই তাকে প্রহার করতে করতে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দুরে নিয়ে যান। পরে স্থানীয় মানুষ তাকে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা করান।
তিনি জানান, ‘ওইদিন কোন কারণ ছাড়াই চেয়ারম্যান সাহেব তার দুই সহযোগীসহ আমার বাড়িতে এসে হঠাৎ আমাকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দুরে নিয়ে যান। ভুনবীর ইউনিয়নের গত উপ-নির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী কাওসার আহমদের পক্ষে কাজ করায় চেয়ারম্যান আমার উপর ক্ষিপ্ত হন।
সে সময়েই তিনি আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়েছিলেন। এছাড়া অতীতে আমরা প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে গিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে ঈদগাহ-তে ঈদের নামাজ আদায় করতাম। এ বছর ঈদে আমরা গ্রামবাসী সেখানে না গিয়ে নিজেদের এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করি। মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে আমি এ সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলাম। এ নিয়ে চেয়ারম্যান এর সাথে আমাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। তিনি চান আমরা শাসন ইলামপাড়া গ্রামবাসী সব সময় যেন চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনের ঈদগাহতে ঈদের নামাজ পড়ি।
মোশারফ মিয়া তার উপর আক্রমনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, ‘আমি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়ের সাথে দেখা করে ঘটনাটি জানিয়াছি। আর যেন কারো উপর এ ধরণের হামলার ঘটনা না ঘটে এ জন্য আমি ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় জানান, ‘মোশারফ মিয়া আমার কাছে এসেছিলেন। যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি মোশারফ মিয়াকে বলেছি, ভুনবীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেবকে দ্রæততম সময়ের মধ্যে ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবো। দেখি তাঁর কাছ থেকে ভালো কোন উত্তর পাই কি না।
ঘটনার ব্যাপারে ভুনবীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশিদ তালুকদার জানান, ‘মোশারফ মিয়াকে মারধর করার অভিযোগ মিথ্যে। আমি ৩৩ বছর ধরে মেম্বারী ও চেয়ারম্যানী করতেছি। মোশারফ মসজিদে যাবার রাস্তা কেটে ফেলেছে। কেন কেটেছে আমি কি তাকে জিজ্ঞেস করার অধিকার নেই? আমি শুধু তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি। মারধর করার ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন ঘটনা রটানো হচ্ছে।