সিলেটে নতুন ভাড়ায় চলছে বাস, যাত্রী কম

সিলেটে নতুন ভাড়ায় চলছে বাস, যাত্রী কম

সিলেটে আজ (রবিবার- ৭ আগস্ট) থেকে নতুন ভাড়ায় চলছে গণপরিবহন। তবে সিলেটের সব রুটেই গত দুদিন থেকে যাত্রী কম বলে জানা গেছে। 

পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, ভাড়ার চার্ট এখনও তৈরি না হওয়ায় দুয়েকটি পরিববহন আগের রেটেই ভাড়া নিচ্ছে। তবে যেসকল রুটে ভাড়া বাড়তি নেওয়া হচ্ছে সেসব রুটে যাত্রীরা ঝামেলা করছেন। যাত্রীরা আগের ভাড়াই দিতে চাচ্ছেন। তবে বুঝিয়ে বলার পর যাত্রীরা টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।  

এদিকে যাত্রীদের অভিযোগ- চার্ট তৈরি না করে ইচ্ছেমতো ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। 

রবিবার সকাল ও দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এবং বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে- শনিবারের মতো আজও সিলেটে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিলো কম। কম ছিলেন যাত্রীও। অফিস-আদালত খোলা থাকলেও সিলেট মহানগরীল সড়কগুলোয় কম ছিলো গাড়ির চাপ।

যাত্রী কম থাকার বিষয়ে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন- একদিকে গরম, অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব- এই দুটি বিষয় মিলে সড়ক যাত্রী কম। তবে আশা করছি, দু-একদিনের মধ্যে অবস্থা আগের মতো হয়ে যাবে। 

বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বেশি ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা যাত্রীসাধারণের বিরক্তির কারণ হতে চাই না। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়ে ভাড়াও বাড়িয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তাই বাধ্য হয়ে আমরাও আজ থেকে বাড়িতে ভাড়া নিচ্ছি। তবে মালিক সমিতি এখনও নতুন ভাড়ার চার্ট বানিয়ে দেয়নি। আজ রাতে দেওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকালের (সোমবার) মধ্যে পেয়ে গেলে প্রত্যেকটি বাসে নতুন ভাড়ার চার্ট টানানো থাকবে। 

মইনুল ইসলাম আরও বলেন, যাত্রীরাও নতুন ভাড়ার চার্ট দেখতে চান। আজ জকিগঞ্জ রুটে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে কিছুটা ঝামেলার মধ্যে পড়েছেন চালক-শ্রমিকরা। কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তবে বুঝিয়ে বলার তারা ভাড়া দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর পরিবহন ভাড়া সমন্বয়ে শনিবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বাস ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা আসে।
 
ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। রোববার (৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপসচিব মো. মনিরুল আলম ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ২০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী মিনিবাস এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা) অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ০৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৪০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া যথাক্রমে ১০ টাকা ও ৮ টাকা নির্ধারিত হলো।
 
ভাড়া বৃদ্ধি গ্যাসচালিত মোটরযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ সংক্রান্ত ইতোপূর্বে জারিকৃত সকল প্রজ্ঞাপন ও আদেশ রহিত করা হলো। ভাড়ার হার প্রতিটি বাস ও মিনিবাসের দৃশ্যমান স্থানে আবশ্যিকভাবে টানিয়ে রাখতে হবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ ভাড়ার হার ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে, শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। যেখানে ভোক্তা পর্যায়ে লিটারপ্রতি খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা, ও পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারপ্রতি বেড়েছে যথাক্রমে ৪৪ টাকা ও ৪৬ টাকা। আর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে বেড়েছে ৩৪টাকা। আগে ডিজেলের দাম ৮০ টাকা, পেট্রোল ৮৬ টাকা ও অকটেনের দাম ছিল ৮৯ টাকা।