সিলেটের ২০ হাজার প্রবাসীর অপেক্ষায় শেষ হচ্ছে এ সপ্তাহেই

সিলেটের ২০ হাজার প্রবাসীর অপেক্ষায় শেষ হচ্ছে  এ সপ্তাহেই

বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। ল্যাব স্থাপন শেষে চলতি সপ্তাহেই হবে বিমানবন্দরে করোনার নমুনা পরীক্ষা। বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষা শুরু হলে দেশে এসে আটকেপড়া আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের ভিসাধারী প্রবাসী কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ পাবেন। 

করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন এক হাজার ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার পার্কিং ইয়ার্ডে পিসিআর মেশিনটি স্থাপন করা হচ্ছে। প্রবাসীদের গন্তব্য দেশের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন বিমান ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগে যাত্রীদের করোনা টেস্ট করার লক্ষ্যে এটি স্থাপন করছে সরকার। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও এ ধরনের মেশিন স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রসঙ্গত, বিমান ছাড়ার মাত্র ৬ ঘণ্টা আগে করোনার পিসিআর পরীক্ষার নিয়ম বেঁধে দেওয়ায় সিলেটে আটকে আছেন অন্তত ২০ হাজার আরব-আমিরাতগামী প্রবাসী। সারাদেশে এ সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ হাজার। দেশের বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর করানো টেস্ট ব্যবস্থা না থাকায় আরব আমিরাতগামী প্রবাসীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ২ লাখ প্রবাসী শ্রমিক কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। 

প্রবাসীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবশেষে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গতকাল শনিবার বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপনের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। 

পরিদর্শনের সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম এনডিসি উপস্থিত ছিলেন। 

পরিদর্শনকালে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীকে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান জানান, আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনসহ আরটি-পিসিআর কার্যক্রম শুরু হবে। ল্যাব স্থাপনের জন্য নির্বাচিত একটি ডায়গনস্টিক সেন্টার কাজ করছে। নির্ধারিত স্থানে মোবাইল ল্যাব স্থাপন করে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করা হবে। 

এরপর মন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে স্থাপিত প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক পরিদর্শন ও প্রবাসী কর্মীদের জন্য সেবা কার্যক্রম তদারকি করেন এবং মুজিব কর্ণার পরিদর্শন করেন। 

জানা গেছে, সাতটি প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষার জন্য আরটিপিসিআর মেশিন স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠান ল্যাব স্থাপন করে নির্ধারিত ফির বিনিময়ে বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা করবে। এর মধ্যে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ফি দুই হাজার টাকা, স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেড এর ফি দুই হাজার টাকা, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টারের ফি এক হাজার ৮৫০ টাকা, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেডের ফি এক হাজার ৮০০ টাকা, জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের এক হাজার ৭০০ টাকা, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেডের ফি এক হাজার ৭৫০ টাকা ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকের ফি ২ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এই সাত প্রতিষ্ঠানের ল্যাবের মানও যাচাই করা হবে। এসওপি মানসম্মত কি না তা যাচাই করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠাতে হবে। আরব আমিরাত সেসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আপত্তি না জানালে কাজ দেওয়া হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের এসওপি নিয়ে আপত্তি এলে তাদের কাজ দেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। 

তবে, সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে সহসাই বসছে না আরটিপিসিআর ল্যাব। এ বিষয়ে বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ আহমদ বলেছেন, ‘এখনও এ বিষয়ে নির্দেশ আসেনি। যেহেতু, ঢাকা কেন্দ্রীয় বিমানবন্দর তাই প্রথমে সেখানে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেটি স্থাপন হলে সারাদেশ থেকে বিদেশগামীরা করোনা টেস্ট করে যথাযথ গন্তব্যে যেতে পারবেন।’

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে নির্দেশ পেলে সিলেট বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।