৩ দিনে লাউয়াছড়ায় রাজস্ব আয় ৩ লাখ টাকা

৩ দিনে লাউয়াছড়ায় রাজস্ব আয় ৩ লাখ টাকা

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৩ দিনের ছুটিতে (১৬ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত) পর্যটকদের টিকেটের ফি ও পার্কিং থেকে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৩১ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, টানা ৩ দিনের ছুটিতে উপচেপড়া ভিড় ছিল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ মৌলভীবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। এর মধ্যে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রায় ৭ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছে। বিজয় দিবসের দিনে ২ হাজার ৮৩৫ জন পর্যটক প্রবেশ করেন। তার মধ্যে ৮ জন ছিলেন বিদেশী। সেদিন আয় হয় ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৫৯ টাকা। এরপরের দিন শুক্রবার ২ হাজার ২৯৩ জন পর্যটক প্রবেশ করেন। এর মধ্যে একজন ছিলেন বিদেশী। এতে রাজস্ব আয় হয় ১ লাখ ৯ হাজার ১৯০ টাকা। ছুটির শেষ দিন শনিবারে প্রবেশ করেন ১ হাজার ৫৭৮ জন পর্যটক। যার মধ্যে ৬ জন বিদেশী। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭৬ হাজার ৮৮৫ টাকা।

লাউয়াছড়া উদ্যানের ইকো ট্যুর গাইড সাজু মার্চিয়াং বলেন, ‘বন্ধের প্রতিদিনই রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক আসেন। চট্টগ্রাম, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে পর্যটকরা লাউয়াছড়ায় এসে উপভোগ করেছেন। কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে, কেউ বন্ধু-বান্ধব নিয়ে; আবার অনেক এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরাও এসেছেন।’

সরজমিনে দেখা গেছে, পর্যটকদের সাথে সাথে লাউয়াছড়ার মুল ফটকের আশেপাশে বেড়েছে ময়লার স্তূপ। বনবিভাগের পক্ষ থেকে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান থাকলেও বেশীরভাগ পর্যটক তা ব্যবহার করছেন না। এ নিয়ে বিরক্ত অনেক সচেতন পর্যটক।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক জেরিন খান বলেন, ‘যান্ত্রিক নাগরিক জীবনের ব্যস্থতার মধ্যে ছুটি পেলেই চেষ্টা করি প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার। আর সেই কারণে এই ছুটিতে লাউয়াছড়া ঘুরতে এসেছি পরিবার পরিজন নিয়ে। কিন্তু এখানে এসে মন খারাপ হল। এত পর্যটক এবং তাদের হৈ চৈ, যত্রতত্র প্লাস্টিকের খালি বোতল, চিপসের প্যাকেট। এভাবে চলতে থাকলে বন্যপ্রানী এবং প্রকৃতির ক্ষতি হবে।’

‘‘বন্যপ্রাণীর ঘর লাউয়াছড়া। তাই তাদের ঘরে আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃতি বান্ধব পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তবেই আমাদের সংরক্ষিত বন কেন্দ্রিক যে পর্যটন ব্যবস্থা তা স্থায়ী হবে। নয়তো সংকট বাড়বে। প্রকৃতি ভাল না থাকলে মানব সভ্যতাও হুমকিতে পড়বে। তাই মানুষের নিজের স্বার্থে হলেও প্রকৃতিকে ভাল রাখতে হবে।’’

রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যটকদের ভিড় ছিল। এ বছরে এত পর্যটক একসাথে লাউয়াছড়া আসেননি। পর্যটকরা যাতে যত্রতত্র ময়লা ফেলতে না পারেন সে জন্য বিভিন্ন নির্দেশনাসহ ময়লার ফেলার নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে বনবিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছে।’

মৌলভীবাজার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) হাসান মোহাম্মদ নাসের রিকাবদার বলেন, ‘৩ দিনে প্রচুর পর্যটক এসেছিলেন। আমরা সব সময়ই পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সজাগ থাকি। তবে এবার হঠাৎ পর্যটকের আগমন কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরিকল্পনা সেভাবে গ্রহণ করি। ফলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি।