উজ্জীবিত আনসার আল ইসলাম, চিন্তায় গোয়েন্দারা
ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আদালত ও কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পলাতক জঙ্গিদের গ্রেপ্তারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ইউনিট মাঠে কাজ করছে। এছাড়া আদালত ও কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নেওয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যে নামটি বড় হয়ে উঠে আসছে সেটি হলো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। আদালত চত্বর থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে বলা হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় জঙ্গি কার্যক্রম। আর এ ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে ঘটিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, দেশে বর্তমানে যতগুলো জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর ও শক্তিশালী আনসার আল ইসলাম। সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে সংগঠনটি নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ার চেষ্টা করে আসছিল।
গোয়েন্দারা বলছেন, আদালত থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য সফল হয়েছে। এ ঘটনায় সংগঠনটির টপ টু বটম উজ্জীবিত হয়েছে। এই উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে সংগঠনটি বড় কিছু করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার কোনো নির্দেশনা আনসার আল ইসলাম পেয়েছে কি না সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
জঙ্গি দমনে কাজে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এমন বেশ কয়েকটি বাহিনীর ইউনিটের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আনসার আল ইসলামকে ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার বাংলাদেশি শাখা (একিউআইএস) বলা হয়। সম্প্রতি আনসার আল ইসলামের কার্যক্রমের ধরন দেখে গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন আল-কায়েদা থেকে নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা পেয়ে মাঠে নেমেছে তারা। বড় কিছু করার উদ্দেশ্যে পুরাতন ও বিশ্বাসযোগ্য সদস্যদের যে কোনো মূল্যে কাছে পেতে চাচ্ছে সংগঠনটি। তবে ঠিক কী নির্দেশনা আনসার আল ইসলামের কাছে এসেছে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে গোয়েন্দারা মনে করছেন কোনো নির্দেশনা আনসার আল ইসলামের কাছে হয়তো এসেছে, আর সেই অনুযায়ী সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।
উজ্জীবিত আনসার আল ইসলাম যে কারণে হুমকি
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) সূত্র বলছে, দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে নিজেদের পুরোনো ও প্রশিক্ষিত সদস্যদের একত্রিত করে বড় কোনো জঙ্গি কার্যক্রম করার জন্য চেষ্টা করে আসছে সংগঠনটি। নিজেদের সদস্যদের ছিনিয়ে নেওয়ার এই পরিকল্পনা হয় তিন মাস আগে। সে চেষ্টা সফল হওয়ায় আদর্শিক ও মানসিকভাবে চাঙ্গা অবস্থানে রয়েছে আনসার আল ইসলাম। বড় কোনো জঙ্গি কার্যক্রম করার মতো শক্তি ও সদস্য ইতোমধ্যে সংগঠনটি সংগ্রহ করে ফেলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আনসার আল ইসলামের উজ্জীবিত ও আবারও সংগঠিত হওয়ার ঘটনা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদালতের ঘটনা প্রমাণ করে এরা এখন যেকোনো কাজ করে ফেলতে পারবে। আমাদের আশঙ্কা আদালত থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার সফলতাকে কাজে লাগিয়ে তারা এখন অপারেশন লেভেলের কিছু করতে পারে বা করার পরিকল্পনা করছে। অপারেশন লেভেলের কার্যক্রমের মধ্যে তারা হয়তো বড় কোনো জঙ্গি কার্যক্রম, সেটা হামলা কিংবা টার্গেট কিলিংয়ের পরিকল্পনা করতে পারে।
নির্বাচনের বছরকে বেছে নিতে পারে আনসার আল ইসলাম
জঙ্গি দমনে কাজ করা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট সূত্রে জানা যায়, নিজেদের অস্তিত্বের জানান ও সক্ষমতা দেখানোর জন্য আসন্ন নির্বাচনের বছরকে বেছে নিতে পারে আনসার আল ইসলাম। সেই জন্য হয়তো এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সংগঠনটি। কেননা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে তাদের প্রস্তুতি ও মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয় এবং রাজনৈতিকদলগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে তাদের গণতান্ত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেই লক্ষ্যে আস্তে আস্তে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যখন প্রশাসন ও পুলিশ নির্বাচনের বছরের দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যস্ত থাকবে, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বড় কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজদের সক্ষমতা জানান দিতে পারে আনসার আল ইসলাম।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, তারা সজাগ রয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিষয়ে। আদালতের ঘটনার পর আরও নড়েচড়ে বসেছে তারা। জঙ্গিদের সকল পরিকল্পনা নস্যাৎ করার জন্য তারা কাজ করছেন।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বড় হামলা কিংবা অপারেশনের সক্ষমতা অর্জন করতে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আসছে আনসার আল ইসলাম। সে ক্ষেত্রে পুরোনো ও প্রশিক্ষিত সদস্যদের ওপর আস্থা রেখে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। সংগঠনের অধিকাংশ সদস্য বিভিন্ন মামলায় কারাগারে বন্দি থাকায়, গত কয়েক বছর ধরে তাদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে কারাগার থেকে সদস্যদের জামিনে বের করে নিয়ে আসার কাজ করছে আনসার আল ইসলাম। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২২০ মামলায় প্রায় ২৫০ জনের মতো আসামির জামিন হয়েছে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সংখ্যা জঙ্গি।
গত ২০ নভেম্বর পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা।
এ বিষয়ে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, জামিনে বের হওয়া জঙ্গিদের অধিকাংশই এখন পলাতক। পলাতকদের অধিকাংশ আবার আনসার আল ইসলামের সদস্য। আনসার আল ইসলামের সদস্যদের এই প্রবণতা এই বছরের শুরুতেই লক্ষ্য করা গেছে বেশি। তাদের গ্রেপ্তারে এবং তাদের উদ্দেশ্য জানার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায় দ্রুত এ বিষয়ে সফলতা পাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অনলাইনে চলছে সদস্য সংগ্রহ, একই তালে চলছে অর্থ সংগ্রহ
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, সাংগঠনিক একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পুরোনো ও প্রশিক্ষিত সদস্যদের পাশাপাশি অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজও সমান তালে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আনসার আল ইসলাম। অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সদস্য সংগ্রহের বিষয়টি নতুন কিছু না হলেও আনসার আল ইসলামের মধ্যে এই প্রবণতা ইদানিং বেশি দেখা গেছে। নানা ধরনের এনক্রিপটেড অ্যাপ ব্যবহার করে নতুন সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ ও বিভিন্ন ধরনের মিটিং করে আসছে আনসার আল ইসলাম। আদর্শগত মতবাদ ছড়ানো ও সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতেই মূলত অনলাইন মাধ্যমকে বেছে নিয়েছে তারা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সমান তালে অর্থ সংগ্রহের দিকেও বেশ মনোযোগী আনসার আল ইসলাম। নামে-বেনামে বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। তারা এমনভাবে অর্থ সংগ্রহ করছে , দাতা কোনোভাবেই জানতে পারছেন না যে তার দান করা অর্থটি দিন শেষে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের কাছে চলে যাচ্ছে।
শহরের তুলনায় আনসার আল ইসলামের অর্থ সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রামাঞ্চলে বেশি হচ্ছে বলেও গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। সংগঠনটির বেতনভুক্ত অনেক সদস্য আছেন যারা প্রতি মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সংগঠনের হাতে তুলে দেন।
কারাগারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
গোয়েন্দারা মনে করছেন, কারাগারে বসে হাই প্রোফাইল ও শীর্ষ জঙ্গিরা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য নানা পরিকল্পনা করছেন। তারা কারাগারে বসে সহজেই স্মার্ট ফোন পেয়ে যাচ্ছেন। সেই ফোন ব্যবহার করে তারা সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। আদালত থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার মূলপরিকল্পনাও কারাগারেই হয়েছে। কারাগারে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে কারাকর্তৃপক্ষকে একাধিকবার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হলেও তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে কারাগারের এমন অবস্থা ১-২ হাজার টাকা দিলে জঙ্গিরা সারা রাত নিজেদের সেলে ফোন ব্যবহার করতে পারছেন। সেখানে বসেই তাদের যাবতীয় পরিকল্পনা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান বলেন, যদি প্রমাণিত হয় কারাগারে জঙ্গিরা বসে পরিকল্পনা করেছে বা এই পরিকল্পনা করতে কারাগারের কেউ সহযোগিতা করেছে বা তাদের ফ্যাসিলিটেট করেছে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
মেজর জিয়াই এখন বড় হুমকি
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দিনে-দুপুরে দুই জঙ্গি সদস্য ছিনতাইয়ের ঘটনায় আবারও আলোচনায় একাধিক হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া। যাকে গোয়েন্দা জালে ফেলে অনেকবার কাছে গিয়েও ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গোয়েন্দারা বলছেন, আনসার আল ইসলামের এই সামরিক শাখার প্রধান এখনও সবচেয়ে বড় হুমকি। তার নির্দেশ এবং পরিকল্পনায় আনসার আল ইসলামের সকল কার্যক্রম চলছে।
গোয়েন্দারা বলছেন, জিয়া অনেক জঙ্গি ঘটনার মাস্টারমাইন্ড। সে গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আনসার আল ইসলামের সক্রিয়তা বন্ধ করা যাবে না। ধারণা করা হচ্ছে সে এখন পর্যন্ত দেশেই রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা।
উল্লেখ্য, গত রোববার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে দুই জঙ্গিকে একটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে জঙ্গি সদস্য মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই দুই জঙ্গি দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি আসামি ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড হলেন নিষিদ্ধ-ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক মেজর জিয়া। তার অনুমতিতে এই ছিনতাই অপারেশন চালান সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মশিউর রহমান ওরফে আইমান।
গ্রেপ্তার থাকা জঙ্গি আরাফাত ও সবুরকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, কনডেম সেলে থাকা ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামিরা প্রায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন। কারাগারে বসেই পরিকল্পনা হয় আসামি ছিনতাইয়ের।
প্রথমে ত্রিশালের জঙ্গি ছিনতাইয়ের মতো প্রিজনভ্যানে হামলা করে সহযোগীদের ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে কাশিমপুর থেকে পুরান ঢাকায় আদালত পর্যন্ত আনা-নেয়ার সময় প্রিজনভ্যানে হামলা করাটা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাদের কাছে।
তাই তুলনামূলক কম নিরাপত্তা থাকায় ছিনতাই অপারেশনের স্পট হিসেবে বেছে নেয় আদালত প্রাঙ্গণকে। আর অপারেশনের জঙ্গি সদস্যদের ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেতে দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছিল সহযোগীরা।
জানা গেছে, ঘটনার পর তদন্তের অংশ হিসেবে সিটিটিসির একাধিক টিম কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার পরিদর্শনে যায়। কারাগার থেকে কার মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে জঙ্গিরা বাইরে যোগাযোগ করেছিল তা জানার চেষ্টাও চলছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গি সদস্যকে ছিনতাই অপারেশনে নেতৃত্বদানকারীর নাম-পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এই অপারেশনে তাদের বেশ কয়েকজন সহযোগীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। জঙ্গি ছিনতাই অপারেশনে নেতৃত্বদানকারীসহ সবাইকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা কাজ করছি।