ফুটবল বিশ্বকাপ ইতিহাসে লজ্জাজনক যত হার
গতকাল বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলে হারিয়েছে স্পেন। এর আগে, সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হার, আবার গতকালই জাপানের কাছে জার্মানির হারে এবারের বিশ্বকাপে ফেভারিটদের অবস্থান নিয়ে শঙ্কায় আছেন বিশ্লেষক-ফ্যানরা। তবে, ফুটবলের ইতিহাসে বড় অঘটন ঘটেছে এর আগে বহুবার। লজ্জাজনক হার মেনে নিতে হয়েছে অনেক ফেভারিট দলকেই। স্পোর্টসব্রিফ ডটকমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এরকমই কিছু ঐতিহাসিক হারের তথ্য।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় কোনটি? এ প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ ফ্যানই ২০১৪ সালে জার্মানি ও ব্রাজিলের মধ্যকার ম্যাচের কথা বলবে। কিন্তু এরচেয়েও বেশি ব্যবধানে হাঙ্গেরির কাছে হারে এল সালভাদোর। ১৯৮২ সালের সেই ম্যাচে এল সালভাদোরকে ১০-১ গোলে হারায় হাঙ্গেরি।
এর আগে ১৯৭৪ সালে জায়ারকে ৯-০ গোলে হারায় যুগোস্লাভিয়া। এরও ২০ বছর আগে, ১৯৫৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৯-০ গোলে হারায় হাঙ্গেরি।
যুগোস্লাভিয়া-জায়ার (১৯৭৪)
বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় পরাজয় হিসেবে বিবেচিত আসলে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের হারই। ২০১৪ সালে সেবারের ফেভারিট ব্রাজিলকে সেমিফাইনালে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারায় জার্মানি। ফুটবলের সবচেয়ে সফল দলগুলোর মধ্যে অন্যতম এক দলকে এত ব্যবধানে হারানো মোটেও কোনো তুচ্ছ অর্জন নয়।
এর আগে ২০০২ বিশ্বকাপে মেক্সিকোর জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে আমেরিকা। টুর্নামেন্টের নকআউট পর্বে নিজেদের মহাদেশীয় প্রতিদ্বন্দ্বী মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারায় মার্কিনরা।
ব্রাজিল-জার্মানি (২০১৪)
বড় পরাজয়ের হারের এ তালিকায় আছে ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও পেরুর মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ। সেবারের আসরে পেরুকে ৬-০ গোলে হারিয়ে বিজয়ীর শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। তবে, সেই ম্যাচে পেরুর ছয়জন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তারা আর্জেন্টিনাকে গোল করার অনুমতি দিয়েছে; এতে বেশ বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়।
লজ্জাজনক হারের ইতিহাস আছে স্পেনেরও। জাভি হার্নান্দেজ এবং আন্দ্রে ইনিয়েস্তার সৃষ্ট বিখ্যাত টিকি-টাকা স্টাইলের খেলা দিয়ে স্পেন ছয় বছর ফুটবলে আধিপত্য বিস্তার করে। পরপর তিনটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতে তারা।
আমেরিকা-মেক্সিকো (২০০২)
কিন্তু, ২০০৮ ও ২০১২ সালে ইউরো কাপ, ২০১০ সালে বিশ্বকাপ জেতা দলটি ২০১৪-র বিশ্বকাপে হারে ডাচদের কাছে। সেবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে স্পেনকে ৫-১ গোলে হারায় নেদারল্যান্ডস।
বিশ্বকাপের শুরুর দিকে, ১৯৫০ সালের টুর্নামেন্ট ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফুটবল বিশ্বকে চমকে দেয় আমেরিকা। তারকা প্লেয়ার নিয়ে খেলতে আসা ইংল্যান্ড টিমকে ১-০ গোলে হারায় অপেশাদার খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামা আমেরিকা দল।
স্পেন-নেদারল্যান্ডস (২০১৪)
ডিশওয়াশার থেকে শুরু করে ছাত্র, শিক্ষক, ড্রাইভার- নানা পেশা থেকে আসা খেলোয়াড় ছিল আমেরিকার দলে। ঐতিহাসিক ওই ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন হাইতিয়ান ছাত্র জো গেটজেন্স।
তবে, বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের মাধ্যমে অভিষেক হওয়া দল সম্ভবত হাইতি। ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে মোটমাট ১৪ গোল হজম করতে হয় তাদেরকে; এর বিপরীতে হাইতির গোল ছিল মাত্র ২।
আমেরিকা-ইংল্যান্ড (১৯৫০)
গ্রুপ ৪-এ হাইতি ইতালির কাছে হারে ৩-১ গোলে, আর্জেন্টিনার কাছে হারে ৪-১ গোলে। কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় হার আসে পোল্যান্ডের হাত ধরেই। বিশ্বকাপে অভিষেক নেওয়া দলটিকে পোল্যান্ড হারায় ৭-০ গোলে।
এবারের বিশ্বকাপে জাপানের কাছে হারের আগে গত বিশ্বকাপেও লজ্জাজনক হার দেখেছে জার্মানি। ২০১৮ এর বিশ্বকাপে সুইডেনকে ২-১ গোলে হারানো জার্মানি তাদের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হারে ১-০ গোলে।
সাউথ কোরিয়া-জার্মানি (২০১৮)
নকআউট পর্বে যাওয়ার জন্য তাদের জিততে হতো দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে। কিন্তু ফুটবল ফ্যানদেরকে চমকে দিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে জিতে যায় কোরিয়া। ২-০ গোলে জার্মানিকে হারায় তারা।