শাবিপ্রবিতে উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলন

ফের স্লোগান মুখর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

ফের স্লোগান মুখর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

শাবি প্রতিনিধি || উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং বন্ধ করে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টগুলো দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে ফের বিক্ষোভ–মিছিল করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গোল চত্বর’ থেকে মিছিলটি বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা৷

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘গত ২৬ জানুয়ারি আমাদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিলো। এরপর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আমাদের দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার কোনরকম দৃশ্যমান প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের উপর করা ২টি মিথ্যা মামলা, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত নম্বর, বিকাশ, নগদ একাউন্টসহ অনলাইনে লেনদেনের মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর এক-দু’টি বাদে সেসবের প্রায় সবগুলোই এখনো বন্ধ আছে।  আমাদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি, আমাদের দাবিগুলোও এখনো পূরণ হয়নি। এই দাবিগুলো নিয়ে আমরা গত বুধবারের মতো আজকেও একটি মিছিল করেছি।’

এসময় তাদের হাতে ‘দৌড়া, চাটুকার দৌড়া’, ‘ফরিদ হটাও, শাবি বাঁচাও’, ‘১,২,৩,৪, ফরিদ তুই গদি ছাড়’, ‘পালা, চাটুকার পালা’, ‘ফরিদের গদি অস্তাচলে, ফরিদ যাবে রসাতলে’, ‘আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে’, ‘গদির মায়া বড় মায়া?’, ‘ফরিদের দালালেরা হুশিয়ার, সাবধান!’, ‘Save SUST’, ‘অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করো’, ’স্প্লিনটার বিতরণ কেন্দ্র। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের শরীরে স্প্লিনটার সংযোজন করা হয়। যোগাযোগ: শাবিপ্রবি ভিসি কার্যালয়’ ইত্যাদি লেখা এবং ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উপর ঘটে যাওয়া পুলিশি হামলার বিভিন্ন ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়৷

মিছিল শেষে গত ১৬ জানুয়ারি শাবিপ্রবি’র আইআইসিটি ভবনের সম্মুখে যে স্থানে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠি, শটগান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে হামলা চালিয়েছিল, সেখানে রক্তিম হস্তছাপ এঁকে দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাভবন–“ডি” এর গ্রাউন্ডে একটি সাধারণ সভা করেন তারা।

শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের আইআইসিটি ভবনের সম্মুখের যে স্থানে অবাঞ্ছিত উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নির্দেশে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ লাঠি, শটগান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল, সেখানে সমস্ত অন্যায্যতা-নিপীড়ন-জুলুমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যে চিরন্তন লড়াই তার ইশতেহার হিসেবে রক্তিম হস্তছাপ এঁকে দিয়েছি। উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ–এর পদত্যাগ বা অপসারণের আগ পর্যন্ত এভাবেই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন চলবে।’

প্রসঙ্গত, গত মাসের ১৩ তারিখ রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। পরে ১৬ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ অবরুদ্ধ হলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের নানান রকম আন্দোলন–কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।