পাকিস্তানের হাই-কমিশনারের সঙ্গে সিলেট চেম্বারের মতবিনিময়

পাকিস্তানের হাই-কমিশনারের সঙ্গে সিলেট চেম্বারের মতবিনিময়

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই-কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ এর সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (০৯ জুন) সিলেট চেম্বার কনফারেন্স হলে সিলেট চেম্বারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মিনতি দেবী ও এক্সিকিউটিভ অফিসার সাঈদ খান আকাশ এর সঞ্চালনায় উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাকিস্তানের হাই-কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বলেন, সিলেট বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সিলেট কৃষি নির্ভর, পাকিস্তানও মূলত কৃষি নির্ভর তাই দুই দেশের কৃষি শিল্পের বিকাশে ও আধুনিকায়নে আমরা একসাথে কাজ করতে পারি। আগামী আগস্ট মাসে পাকিস্তান এগ্রো ফুড ফেস্টিবাল অনুষ্ঠিত হবে।

সিলেটের কৃষির সাথে সম্পকৃত ব্যবসায়ীদের জন্য এটা একটা ভালো সুযোগ। তিনি সিলেট চেম্বারের নেতৃবৃন্দকে উক্ত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন জানান। আমরা দুই দেশ শুধু নিজেদের সম্ভাব্যখাত একে অপরকে তোলে ধরলে চলবে না, তা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। দুই দেশের লাভের কথা চিন্তা করে এখন সময় আমাদেরকে দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য নিজেদের তৈরী করা। এই প্রচেষ্টার সুত্রপাত হিসেবে বাংলাদেশস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন সিলেট চেম্বারের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে এক টেবিলে বসতে হবে, তবেই সমাধান আসবে।


পাকিস্তানের হাই-কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ আরও বলেন, দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্বির জন্য পাকিস্তান হাই-কমিশন সর্বাত্তক সহযোগিতা প্রদান করবে। উভয় দেশের সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য প্রসারে এগিয়ে আসতে হবে। 
তিনি বলেন, উভয় দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে আরও বেশি সম্পর্কোন্নয়নের জন্য একটি কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।

তিনি পাকিস্তানে বাংলাদেশি পণ্যের এবং বাংলাদেশে পাকিস্তানি পণ্যের একক প্রদর্শনীর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন এবং প্রচলিত পণ্যের বাইরে নতুন নতুন পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময়, পর্যটন প্রসারে ট্যুর প্রোগ্রাম আয়োজন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। 

তিনি বলেন, উভয় দেশের সম্পর্কের পরিসর আরও বৃদ্ধি করতে চাই। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই, যা থেকে উভয় দেশের মানুষ উপকৃত হতে পারে।

সভায় বক্তব্য রাখেন পাকিস্তানের হাই-কমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর কামরান দাঙ্গাল, ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট এটাচি জাইন আজিজ, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি মিসবাহ চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ এমদাদ হোসেন, সহ সভাপতি এহতেশামুল হক চৌধুরী, পরিচালক আরিফ হোসেন।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক বিদ্যমান। প্রকৃতিকন্যা সিলেটে পর্যটন শিল্পে প্রবাসী বিনিয়োগের অবাধ সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেটের চিকিৎসা খাতেও উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্প সমৃদ্ধ, যা বিশ্ব বাজারে রপ্তানি করে আসছে। বাংলাদেশ পাকিস্তান গার্মেন্টস শিল্পে একে অপরের সাথে সংযুক্ত রয়েছে, সেটি আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের পারস্পারিক সম্পর্কের মাধ্যমে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার দক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করতে মহা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি সিলেটের উন্নয়নে রাস্তা সম্প্রসারণ (৬ লেন), ব্রডগেজ রেল লাইন, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সেদিক থেকে সিলেটে ব্যবসার জন্য অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।

এছাড়াও দুই দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর আহবান জানান পাকিস্তান হাই-কমিশন ও চেম্বার নেতৃবৃন্দ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, কাজী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ সারোয়ার হোসেন ছেদু, শান্ত দেব, মোঃ রিমাদ আহমদ রুবেল, আরিফ হোসেন, মোঃ মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী মুসফিক, মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য আশরাফ আহমেদ, সিলেট চেম্বারের সচিব মোঃ গোলাম আক্তার ফারুক, উপ-সচিব সানু উদ্দিন রুবেল প্রমুখ।