অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : তথ্যমন্ত্রী
দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ মিলনায়তনে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ক্যাপিটাল মার্কেট ফর সাসটেইনেবল ফিন্যান্স’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, বহুমাত্রিকতা এসেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি দেশে মানি মার্কেট এবং ক্যাপিটাল মার্কেট যদি একসাথে কাজ করে এবং মানি মার্কেট যদি ফড়িয়ামুক্ত হয় তাহলে দেশের সমৃদ্ধি আরো বৃদ্ধি পাবে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকার কারণে পাকিস্তান কিছু দিন আগ পর্যন্ত দেউলিয়া হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলো। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকার কারণে সেখানে কিভাবে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মানব উন্নয়ন সূচক থেকে শুরু করে সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য সূচকসহ সমস্ত সূচকে আমরা ২০১৪-১৫ সালেই পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। এখানেই জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সার্থকতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেশ রচনার সার্থকতা। আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।’
দেশের অর্থনীতির দিকে দৃকপাত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের অর্থনীতির আকার গত প্রায় ১৫ বছরে কতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে সেটি অনেকের ধারণা নাই। আমাদের অতীতের ১শ’ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে উন্নীত হয়েছে অর্থাৎ প্রায় পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি আমাদের বাজেট ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ৮৮ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬শ’ ৭৫ কোটি টাকা হয়েছে। মাথাপিছু আয় ২০০৮ সালে ছিলো ৬শ’ ডলার, এখন ২ হাজার ৮শ’ ৫৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে।’
বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমাদের দেশ কে পরিচালনা করবে সেটি দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে এবং আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিএনপি, তার মিত্ররা এবং কিছু দেশবিরোধী অপশক্তি আমাদের দেশের বিষয়-আশয় শুধুমাত্র বিদেশিদের কাছে উপস্থাপন করে এসেছে। আমাদের দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছে এবং বিদেশিদের কাছে বারে-বারে গিয়ে আমাদের দেশকে ছোট করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ভারতে জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কিভাবে বিশ্বনেতাদের আলোচনা হয়েছে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথেও শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সে দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এটিই প্রমাণ করে আমাদের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে। আমাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং সেই সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
‘কিন্তু বিএনপিসহ কিছু অপশক্তি বিদেশিদের আমাদের দেশের ওপর নাক গলানোর জন্য যে অপচেষ্টা চালিয়েছিলো সেটির প্রেক্ষিতেই আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সবার সাথে আমাদের সুসম্পর্কের কথা বলেছেন’ উল্লেখ করে হাছান বলেন, ‘আমাদের সাথে দিল্লি, ওয়াশিংটন, ব্রাসেলসসহ সবারই সুসম্পর্ক। সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশের সাথে কোনো কোনো দেশের সুসম্পর্ক যাতে বিনষ্ট হয় সে জন্য অনেক অপচেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দেশে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণে ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন হবে।’
মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো: সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।
কবি আসাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে তথ্যমন্ত্রীর শোক
বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কবি আসাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার কানাডার টরন্টোর একটি হাসপাতালে আসাদ চৌধুরীর (৮০) ইন্তেকালের সংবাদে শোকাহত তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রয়াতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ড. হাছান তার শোকবার্তায় বলেন, কবি আসাদ চৌধুরী বাংলাদেশের প্রধান কবিদের অন্যতম। তিনি তার আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গী, টেলিভিশনে জনপ্রিয় সব অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার জন্য পরিচিত। এ ছাড়া তিনি তার ভরাট কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি করেও মানুষের মন জয় করেছেন। মৌলিক কবিতা ছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী এবং অনুবাদকর্মে তার অনেক অবদান রয়েছে। কবি আসাদ চৌধুরী তার সৃষ্টিকর্মের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণকারী কবি আসাদ চৌধুরীর গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘তবক দেওয়া পান’, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক সম্পাদিত গ্রন্থ ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।