আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে আটক ছিলেন। তাঁকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয়ভাবে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ করা হলেও পরবর্তী সময়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম ‘আওয়ামী লীগ’ করা হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়।
আর পূর্ব পাকিস্তান শব্দ দু’টি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে প্রবাসী সরকারের সব কাগজপত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাম ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৭০ সাল থেকে এই দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা । পরবর্তী সময়ে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই সংগঠনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছর দলটির পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এবারও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে: সূর্যোদয়ের সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৯টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আলোচনা সভা।
সভায় গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়াও সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন।
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা হলেও দীর্ঘ ২১ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন দলটি ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আরেক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামা লীগ। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে দলটি।