শাবিপ্রবি
এবার গণঅনশনে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) এবার শিক্ষার্থীরা আমরণ গণঅনশন শুরু করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে এ কর্মসূচি করু হয়। এর আগে সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে জরুরী প্রেস ব্রিফিং করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
প্রেস ব্রিফিংগে শিক্ষার্থীরা একজন মূখ্য প্রতিনিধি জানান, 'গত বুধবার থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন। পরে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ঢাকায় আমন্ত্রণ জানান। আমাদের অনেশনরত সহপাঠীরা এখন প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। তারা ৪ দিনে পানিও মুখে নেয়নি। তাই আমরা ঢাকা যেতে উনাকে (শিক্ষামন্ত্রী) বিনয়ের সঙ্গে না বলি। তাকে ক্যাম্পাসে আসার অনুরোধ করি কিংবা অনলাইনে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু এখনও তা হয়নি। তাই আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গণঅনেশন শুরু করছি রাত ৮ টা থেকে। অনেশনের শর্ত পূরণ করে যে কেউ এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন।'
এসময় তিনি জানান, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগ না করবেন আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তাকে পদত্যাগ করতেই হবে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের মাধ্যমে শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপুমনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের ঢাকায় গিয়ে আলোচনার প্রস্তাব পাঠান। শিক্ষার্থীরা মন্ত্রীর এই প্রস্তাবে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে জানায়, অসুস্থ ও মুমূর্ষ অবস্থায় সহযোদ্ধাদের ফেলে তাদের ঢাকায় যাওয়া সম্ভব নয়। এজন্যে তারা শিক্ষামন্ত্রীকে ভিডিওকলে আলোচনার প্রস্তাব দেয়, অথবা শিক্ষামন্ত্রী শাবিতে এসে তাদের অবস্থা দেখার আমন্ত্রণ জানায়। শিক্ষার্থীদের এই প্রস্তাবে শিক্ষামন্ত্রী তাদের ফের ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তাব দেন। এতেও রাজি হননি শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা ঢাকায় না গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে গত শুক্রবার ঢাকায় গেছে। শনিবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার তিনটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে নামেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরআগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। পরে দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে দেওয়া উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফেরেন তারা।
আন্দোলনরতরা জানান, উপাচার্য তাদের দাবি না মেনে সময়ক্ষেপণের চেষ্টা করেন। পরে সেই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আহত হন শিক্ষার্থীরা। যদিও পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা।