'করোনার মহাবিপদে' সিলেট, এক সপ্তাহে ৩৭ মৃত্যু

সিলেটে এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের হার ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আর সাত দিনে মারা গেছেন ৩৭ জন। করোনার এই ভয়াবহ সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিলে হাসপাতালের শয্যাসংকট তীব্র হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের তথ্যমতে, গত ৩ জুলাই সিলেট বিভাগে ২০৩ জন রোগী শনাক্তের দিনে মারা যান একজন। এরপর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যু। ৪ জুলাই দুজন, ৫ জুলাই আটজন, ৬ জুলাই দুজন, ৭ জুলাই নয়জন, ৮ জুলাই তিনজন এবং ৯ ও ১০ জুলাই মারা যান ছয়জন করে। এ দুই দিন ৪০০ জন করে রোগী শনাক্ত হন।
সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মানুষের বেপরোয়া মনোভাব ও ভাবলেশহীন চলাচলকে দায়ী করছেন। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও নানা ছলে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। পালন করছে না স্বাস্থ্যবিধি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম বলেন, সবাইকে সরকারনির্দেশিত কঠোর লকডাউন অবশ্যই মানতে হবে। একেবারে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে, পরিধান করতে হবে মাস্ক। না হলে সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে না।
আজ শনিবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৪১। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫১৭।
এ পরিস্থিতিতে হাসপাতালের শয্যাসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। আইসিইউ বেড পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শুধু আইসিইউ নয়, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডেও শয্যার সংকট তৈরি হয়েছে।
সিলেট বিভাগের একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালেও মিলছে না আইসোলেশন বেড।
শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানান, হাসপাতালটির ৮৪টি আইসোলেশন বেডের সব শয্যাতেই রোগী ভর্তি। আর আইসিইউর ১৬টি শয্যার সব কটিই পূর্ণ। ফলে আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে এমন গুরুতর রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই ব্লক মিলে আইসিইউ শয্যা ২০টি। এর মধ্যে কোভিড রোগীদের জন্য ১০টি ও অন্যান্য রোগীদের জন্য ১০টি শয্যা বরাদ্দ। আজ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০টি শয্যার সব কটিই পূর্ণ।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, হাসপাতালে কোভিড উপসর্গযুক্ত ও নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত রোগী আগের চেয়ে বেশি আসছে। ওসমানী হাসপাতালে প্রায় ৩০০ শয্যা প্রস্তুত আছে। কিন্তু অক্সিজেন সাপোর্ট না থাকায় রোগী রাখা যাচ্ছে না। অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা গেলে এখানে ৩০০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে।