সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর

টাকা ছাড়া মিলে না জন্ম নিবন্ধন, জিম্মি সাধারণ মানুষ!

টাকা ছাড়া মিলে না জন্ম নিবন্ধন, জিম্মি সাধারণ মানুষ!

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা আলিনুর হাসান টাকা না দিলে জন্ম নিবন্ধনের কাজ করেন না। শুধু তা-ই নয়, করেন দুর্ব্যবহারও। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলিনুর হাসান অনেক বছর ধরে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে এক স্থানে থাকায় তিনি নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।

ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের জয় বলেন, আমার নিজের জন্ম নিবন্ধন করতে কাগজপত্র এক মাস আগে জমা দিয়েছি। দেড় মাস পর গেলে প্রথমে আলিনুর ২ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তিনি আমাকে মারধর করেন। পরে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেছি।

মজিদপুর গ্রামের লিপটু দেব বলেন, টাকার জন্য এখনও আমার ভাইয়ের জন্ম নিবন্ধন করাতে পারিনি।

শাহাদ হোসেন নামের ভুক্তভোগী আরেকজন বলেন, যেকোনো সার্টিফিকেট আনতে গেলে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা চান আলিনুর হাসান। আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরি করে খাই। জায়গা-জমিও নেই। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আগে যেভাবে ৫০ টাকা করে নিত, সেভাবে নেওয়া হোক।

রিপন মিয়া নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আলিনুর অনেকের ওপর জুলুম করেন। তাকে কিছু বললে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কে আছে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে বোঝাপড়া করবো।’ জন্মনিবন্ধন করতে গেলে আলিনুর খুব দুর্ব্যবহার করেন। অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। চেয়ারম্যান-সচিবদের বলেও কোনো কাজ হয়নি।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শচীকান্ত তালুকদার বলেন, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এ কাজের সঙ্গে আমি কোনোভাবে সম্পৃক্ত নই। এই কাজটা উদ্যোক্তারা করেন। আমার কাজটা হচ্ছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে সেটাকে অনুমোদন দেওয়া।

এ ব্যাপারে কথা বলতে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা আলিনুর হাসান দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিদুল ইসলাম জাগো সিলেটকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ইউনিয়ন থেকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে মানুষকে হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অবশ্যই তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।