দোষারোপের মানসিকতা আমাদের নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দোষারোপের মানসিকতা আমাদের নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে দেশটির সঙ্গে কোনো ধরনের পাল্টা অ্যাকশনে যাওয়ার মানসিকতা বাংলাদেশের নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

র‌্যাব কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে বাংলাদেশ পাল্টা কোনো অ্যাকশনে যাবে কি না— এমন প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা। জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা কোনো চিন্তা-ভাবনা করছি না। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, আমরা ভালো কাজ করছি; আপনারা আমাদের সঙ্গে ভালো কাজ করুন। দোষারোপের মানসিকতা আমাদের নেই। আমাদের বড় লক্ষ্য হলো, কীভাবে আমাদের মানুষের কল্যাণ বাড়াতে পারি, উন্নয়ন করতে পারি। আমরা সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই।’

‘আমাদের পররাষ্ট্র নীতিও এটি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে কাজ করতে চাই। কারো বিরুদ্ধে আমাদের কোনো আক্রোশ নেই’— যোগ করেন মোমেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপের প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, ‘খুব ভালো লেগেছে যে, তিনি (অ্যান্টনি ব্লিনকেন) আমার কথা বুঝেছেন। আমি তাকে বলেছি, র‌্যাব আপনাদের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। আপনাদের যে গ্লোবাল পলিসি; সন্ত্রাস কমানো, মাদক কমানো— এসব বিষয়ে র‌্যাব কাজ করছে। তিনি বলেছেন, তারা আলোচনা করবেন। আলোচনার সুযোগ আছে। ডায়ালগ আছে।’

র‌্যাবের ওপর দেশের মানুষের আস্থা রয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘র‌্যাব আমাদের দেশের দক্ষ প্রতিষ্ঠান। এ বাহিনীর কারণে সন্ত্রাসী কমেছে, মাদকপাচার নিয়ন্ত্রণে আছে। তারা মানবপাচার কমিয়েছে। তাদের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। তারা সহজে পয়সায় বিক্রি হয় না। তারা দেশের নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে, মানবাধিকার রক্ষা করছে।’

মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মোমেন। তিনি বলেন, ‘তারা মানবতার কথা বলে। তারা এসব কথা বলে রাশেদ চৌধুরীকে আটকে রেখেছে। ফেরত দেয় না। খুনিকে রেখেছে, আবার আইনের কথা বলে। যিনি মানবতা লঙ্ঘন করলেন, মানুষ মেরে ফেললেন, তাকে যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় দিয়ে রাখে; এটা তো ঠিক না।’

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘আমরা আলোচনা করে দেখব, কী করা যায়।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কাজ করতে তিন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনও একজন। তাদের কার্যক্রম জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আলাপ করছি। নিজেরা আলাপ করছি। আমরা বসব, কীভাবে কী করা যায়।’

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দফতর।