ধর্মপাশায় তথ্য গোপন করে অবৈধ নিয়োগ!
সুনামগেঞ্জর ধর্মপাশায় পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে হৃদি রায় নামে এক প্রার্থী স্থায়ী বাসিন্দার তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় ধর্মপাশা কলেজ রোডস্থ একটি বাসভবনে ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নিয়োগ না পাওয়া শামীমা আক্তার ও স্বর্না দেবী নামে দুই প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন।
তারা জানান, গত ১২ আগস্ট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অধীনে পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই পদে মধ্যনগর ইউনিয়নের ৩/খ ইউনিটের প্রার্থী হিসেবে গলহা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা শামীমা আক্তার ও স্বর্না দেবীও আবেদন করেন। গত ২৮ অক্টোবর নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওই দুই প্রার্থীসহ অন্যরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু গত ১০ নভেম্বর হৃদি রায় চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন এবং গত ৩০ নভেম্বর ধর্মপাশা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে যোগদান করেন।
তারা আরও জানান, গতকাল রোববার (৪ ডিসেম্বর) হৃদি রায় গলহা গ্রামে তাঁর কর্ম এলাকায় গেলে স্থানীয়রা তাঁকে দেখে অবাক হন। বিষয়টি শামীমা আক্তার ও স্বর্না দেবীর নজরে আসে। পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন নিয়োগপ্রাপ্ত হৃদি রায় মধ্যনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইটাউড়ি গ্রামের বাসিন্দা তাপস রায়ের মেয়ে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মধ্যনগর ইউনিয়নের শুধুমাত্র গলহা, বনগাঁও, কলুমা, করুয়াজান ও মাছুয়াকান্দা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের আবেদন করার সুযোগ ছিল। কিন্তু হৃদি রায় ইটাউড়ি গ্রামের বাসিন্দা হয়েও তথ্য গোপন করে নিয়োগ বোর্ডকে ফাঁকি দিয়ে নিজেকে গলহা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করেন।
শামীমা আক্তার ও স্বর্না দেবী বলেন, ‘চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হলে জানতে পারি গলহা গ্রামের কেউ একজন নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু তিনি কে জানতে পারছিলাম না। রোববার হৃদি রায় গলহা গ্রামে গেলে বিষয়টি জানতে পারি। হৃদি রায় ইটাউড়ি গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। তাই তার নিয়োগ বাতিল করে বৈধ প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে হৃদি রায় ইটাউড়ি গ্রামের বসবাস করেন জানিয়ে বলেন, ‘গলহা গ্রামে আমার নানার জায়গা রয়েছে। উত্তরাধিকারী হিসেবে আমরা সেই জায়গা পাই। সেই সূত্রে আবেদন করেছি।’
মধ্যনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘তাপস রায়ের মেয়ে হৃদি রায় গলহা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নন।’
মধ্যনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সঞ্জিব রঞ্জন তালুকদার টিটু বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। হৃদি রায় যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাগরিকত্ব সনদপত্র নিয়ে থাকেন তাহলে যেটি সত্য সেটির পক্ষে আমরা থাকবো।’
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ কুমার দাস বলেন, ‘পুলিশ ভ্যারিফিকেশনের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবুও কিছু ভুল হতে পারে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’