ধর্মপাশায় শিক্ষকের বাড়িতে হামলা
ধর্মপাশা প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই গ্রামে এক শিক্ষক পরিবারের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একই গ্রামের মৃত রেহান উদ্দিনের ছেলে সালমান তার লোকজন নিয়ে শিক্ষক অলির বাড়িঘরে হামলা চালায়।
হামলায় অলির ফুফু জুলেখা খাতুন ও ভাবী (ফুফাতো ভাইয়ের স্ত্রী) আহত হয়েছেন। তাদেরকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে অলি সালমানের নামসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ধর্মপাশায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অলি সুনই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি সুনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাঁর ছোট ভাই মেহেদী হাসান ডালি একই ইউনিয়নের বালিয়া মাসকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছোট বোন তাহমিনা আক্তার বেখইজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। গত ৫/৭ মাস আগে সুনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে সালমান। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক অলি প্রতিবাদ করলে সালমান ক্ষুব্ধ হয়। এ থেকেই অলির সাথে সালমানের দ্বন্ধ শুরু হয়।
গত কয়েক দিন আগে সালমান ও দোয়েল মিয়া অলির ছোট ভাই শিক্ষক মেহেদী হাসান ডালির কাছে মুঠোফোনে টাকা দাবি করে। ডালি তাদেরকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময় গালিগালাজ ও প্রাননাষের হুমকি দেয়। এই জেরে রোববার রাত আটটার দিকে সালমানের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা দা, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রাদি নিয়ে অলির বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
অলি সাথে সাথে বিষয়টি মুঠোফোনে ধর্মপাশা থানার ওসিকে অবগত করেন। পরে ওসির পরামর্শক্রমে অলি রাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত সালমানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আরেক অভিযুক্ত দোয়েল মিয়া চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা অলির বাড়িঘরে হামলা করিনি। বরং তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমাদের একজন আহত হয়েছে। আর এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’
অভিযুক্তরা তাদের একজনকে মিথ্যা রোগী সাজিয়ে শিক্ষক পরিবারকে অযথা হেনস্থা করার পায়তারা চালানো হচ্ছে- এমনটি জানিয়ে শিক্ষক অলি বলেন, ‘ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ও তাদের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় সালমান ও তাদের লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এই চক্রটি এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আমাদের মতো শিক্ষকদের হয়তো একদিন চরম মূল্য দিতে হবে।’
ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’