নিজ বাসায় মিলল শিক্ষকের স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় নিজের ভাড়া বাসা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম চন্দা রানী সরকার (২৭)। শনিবার বিকেলে উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের পাঠকুড়া গ্রামের ওই বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
চন্দা রানী সরকার শাল্লা উপজেলার আনোয়ারহুদা গ্রামের নিকিল চন্দ্র সরকারের মেয়ে। তাঁর স্বামী মৃদুল চন্দ্র সরকার কাইলাজুড়ি উপজেলার চানপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং জগন্নাথপুর উপজেলার পাটকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
চন্দার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন মৃদুল। শনিবার চন্দাকে ঘরে তালা দিয়ে রেখে বিদ্যালয়ে যান তিনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, মৃদুল চন্দ্র সরকার চাকরির সুবাদে জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের শেওড়া গ্রামে লজিং থাকতেন। ছয় মাস আগে তিনি চন্দা রানী সরকারকে বিয়ে করেন। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে আশারকান্দি ইউনিয়নের পাঠকুড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় ওঠেন। শনিবার স্ত্রী চন্দাকে ঘরে রেখে তিনি বিদ্যালয়ে চলে যান। বিকেলে বাড়ি ফিরে দেখেন গলায় ওড়না প্যাঁচানো স্ত্রীর লাশ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
চন্দা রানী সরকারের ভাই নিহার সরকার অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের এক মাস পর জায়গা কিনবেন বলে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন মৃদুল। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তখন চন্দাকে মারধর করেন তিনি। ওই সময় তাঁরা এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা দেন। দুই দিন আগে চন্দা মুঠোফোনে কল করে জানান, টাকার জন্য স্বামী তাঁকে আবারও নির্যাতন শুরু করেছেন।
নিহার সরকার বলেন, ‘আমার বোনকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
মৃদুল চন্দ্র সরকার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যৌতুকের জন্য নির্যাতন করিনি। আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।’
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) শুভাশীষ ধর, জগন্নাথপুর থানার ওসি (তদন্ত) সুশংকর পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জগন্নাথপুর থানার এসআই জিয়া উদ্দিন বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।