শাল্লায় হামলা, জামিন পেলেন সেই স্বাধীন মেম্বার
সুনামগঞ্জের শাল্লায় নোয়াগাও গ্রামে হিন্দু বাড়িতে হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীন (স্বাধীন মেম্বার) জামিন পেয়েছেন। সোমবার (২১ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার তার জামিন মঞ্জুর করেন।
সুনামগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সেলিম নেওয়াজ বলেন, আলোচিত এই ঘটনায় বিচারক শহীদুল ইসলাম স্বাধীন জামিন দিয়েছেন। এই মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করার আগ পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন।
শহীদুল ইসলাম স্বাধীন দিরাই থানার নাচনী গ্রামের বাসিন্দা সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। তিনি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেলেও গ্রেপ্তারের পর যুবলীগের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।
প্রসঙ্গত, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে গত ১৭ মার্চ শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে বুধবার সকালে হামলা চালিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮ টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করা হয়।
নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামের এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে হেফাজত ইসলামের মামনুল হকের সমালোচনা করে স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় এই তান্ডব চালানো হয়।
শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর হামলাকারীদের ‘মদদদাতা’ হিসেবে স্বাধীন মেম্বারের নাম আসে। হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়ের করা মামলাতেও স্বাধীনকে আসামি করা হয়।
পরে ২০ মার্চ ভোর রাতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় ১৮ মার্চ দুটি পৃথক মামলা করা হয়। ১৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলার বাদী শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম। নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে অন্য মামলাটি করেন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। এরপর ২৫ মার্চ আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সেই ঝুমন দাশের মা নিভা রানী দাশ। পৃথক তিনটি মামলায় আসামী করা হয়েছে দিরাই থানার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ও নাচনী এবং শাল্লা থানার কাশিপুর গ্রামের নামাংকিত ৫০ জনসহ ১৫০০ জনকে।
গত ২ মে থেকে তিনটি মামলা তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এর আগে ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই স্টেডিয়ামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাও মামুমুল হক বক্তব্য দেন।