সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও হজে যেতে পারেন নি সিলেটের চার ব্যক্তি
সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও এজেন্সির ত্রুটির কারণে এবার পবিত্র হজ পালনে যাওয়া থেকে বঞ্চিত সিলেটের চার ব্যক্তি। অভিযোগ করে বলেন, আল্লাহর ঘরের মেহমান হওয়ার স্বপ্ন তাদের দীর্ঘদিনের। কিন্তু ঢাকার একটি ট্রাভেল এজেন্সির প্রতারণার কারণে তাদের এ স্বপ্ন ভেস্তে গেল।
বঞ্চিতদের মধ্যে-সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ইকবাল আহমদ, গোয়াইনঘাটের আলীনগরের ফয়জুল বারী, কমলগঞ্জের ভানুগাছের আবুল মনসুর ও নবীগঞ্জের আব্দুর রহিম।
বঞ্চিত ওই ব্যক্তিরা জানান, পবিত্র হজ পালন করতে তারা আশকোনা হজ ক্যাম্প, হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব)সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে দৌড় ঝাঁপ করেও কোন সুফল পাননি। হজ সংশ্লিষ্টরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের পাসপোর্টে পিআইডি (পিলগ্রিম আইডি-হজযাত্রী নম্বর) নম্বর পড়েনি। তাই, এবার হজে যাওয়া অনিশ্চিত। আজ শনিবার শেষ হজ ফ্লাইট ঢাকা থেকে জেদ্দার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেও এ ফ্লাইটে তাদের আর যাওয়া হচ্ছে না।
হজে গমনেচ্ছুক কোম্পানীগঞ্জের ইকবাল আহমদ জানান, তাবলীগ জামায়াতের সাথী হওয়ায় তারা এক সাথে ৭ জন হজে গমন করতে চান। এ জন্য তারা সিলেট নগরীর একটি স্বনামধন্য ট্রাভেলসের অফিস সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেন। ওই ব্যক্তি তাদেরকে ওই ট্রাভেলসে না দিয়ে ঢাকার সাজিদ হজ ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস এজেন্সির মাধ্যমে তাদেরকে হজে প্রেরণের ব্যবস্থা করেন। এজন্য প্রত্যেকে ৬ লাখ টাকা করে রাফির মাধ্যমে ওই ট্রাভেলসকে প্রদান করেন।
হজে যাওয়া বঞ্চিত ইকবাল আহমদ ও ফয়জুল বারী জানান, টাকা পরিশোধের পর ট্রাভেল এজেন্সির দেয়া নির্ধারিত তারিখে ঢাকায় এসে ফিঙ্গার ফ্রিন্ট দেন। এক পর্যায়ে ওই এজেন্সির লোকজন জানায়, ১৯ জুনের হজ ফ্লাইটে তাদের জেদ্দা পাঠানো হবে।
ভুক্তভোগী এ দুই ব্যক্তি জানান, আল্লাহর ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে যথারীতি বিদায় নিয়ে ঢাকায় এসে ভিন্ন চিত্র দেখতে পান। এক সাথে রেজিস্ট্রেশন করা ৭ জনের মধ্যে ১৯ জুন তাদের মধ্য থেকে সিলেট নগরীর একজন এবং হবিগঞ্জের দুজনকে হজে প্রেরণ করলেও বিপত্তি ঘটে তাদের বেলায়।
খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ঢাকার সাজিদ হজ ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস এজেন্সি টাকা নিয়েও তাদের কোন কাজ করেনি। ওই এজেন্সির অবহেলার কারণে তাদের পাসপোর্টে পিআইডি নম্বরও পড়েনি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তারা এবার হজে যাওয়ার সব চেষ্টা ছেড়ে দিয়ে ঢাকায় তাবলীগ জামায়াতের সাথে সময় কাটাচ্ছেন।
হজ্ব এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন জানান, বিষয়টি হাব সিলেট অঞ্চলকে আগে জানালে তারা চেষ্টা করে দেখতেন। টাকা পয়সা উদ্ধারসহ সার্বিক বিষয়ে এবার হজে যাওয়া থেকে বঞ্চিত চারজনকে সহযোগিতা করবেন বলেও জানান তিনি।
এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান জানান, বঞ্চিত হজ যাত্রীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে টাকা উদ্ধারে আটাব থেকেও সহযোগিতা করা হবে। প্রসঙ্গত, ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণে নির্ধারিত সময়ে সৌদি যেতে পারেননি সব হজযাত্রী। এ কারণে. ফ্লাইটের সময় আরো দুই দিন বাড়িয়েছে সরকার। আজ শনিবার হজফ্লাইট শেষ হবে।
এদিকে দেশের সব হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ থেকে এ বছর পবিত্র হজ পালনে যাচ্ছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৫৮ জন। এর মধ্যে সরকারি হজযাত্রী ১০ হাজার ৩৬০ জন এবং বেসরকারি হজযাত্রী এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন। হজ প্যাকেজের মূল্য চড়া হলেও সিলেটে এবার হজযাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে।