সৌদি আরবে বাংলাদেশি যুবককে গলা কেটে হত্যা

সৌদি আরবে বাংলাদেশি যুবককে গলা কেটে হত্যা

সৌদি আরবে গাজী জাকির হোসেন নামের বাংলাদেশি এক যুবকের নিজ রুমে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে সৌদি আরবের রিয়াদের হাইলোজারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাকির হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলায়। তিনি অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের হাজী কাঞ্চন গাজীর ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। 

এ বিষয়ে মোবাইলে কথা হয় সৌদি আরবে বসবাসরত নজরুল ইসলাম নামের এক প্রবাসীর সঙ্গে। নজরুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজের শ্রমিক দিতেন জাকির হোসেন। জাকিরের রুমে জাকিরসহ চারজন বাংলাদেশি থাকতেন। ভোর ৫টায় সবাই ডিউটিতে চলে গেছে। জাকির যায়নি। ওই দিন বন্ধু রাসেলকে নিয়ে সকাল ১১টায় কোম্পানির এক মালিকের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল জাকিরের। জাকিরের কথামতো রাসেল সকাল ৯টায় জাকিরকে বহুবার ফোন দেন, কিন্তু ফোন ধরেননি। 

জাকিরের খবর নিতে বাসায় যায় রাসেল। অনেক ডাকাডাকি করলেও তিনি দরজা খোলেনি। পরে দুই-তিন জন বাংলাদেশি প্রবাসীর সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে জাহিরের গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ। পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আছে। তখন তারা চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের বাংলাদেশিরাও জড়ো হন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আশপাশের রুমের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিয়ে যান। 

জাকিরের বড় ভাই দুলাল গাজী জানায়, তাঁদের পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল জাকির। তাঁর টাকায় সংসার চলত। জাকির বিভিন্ন কোম্পানিতে শ্রমিক দিয়ে ভালো রোজগার করতেন। জাকিরের রোজগারে ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার লোকজন পরিকল্পিতভাবে জাকিরকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর ভাইয়ের খুনিদের চিহ্নিত করতে সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। 

জাকির হোসেনের বাবা হাজী কাঞ্চন মিয়া কেঁদে কেঁদে বলেন, "আমাদের সবশেষ। ছেলেটাকে বিয়ে করাইনি। ১৩ বছর যাবৎ বিদেশ করছে। জাকিরের মা অসুস্থ। কিছুদিনের মধ্যেই মাকে দেখতে আসার কথা ছিল। আমার বাবা এখন লাশ হয়ে দেশে আসবে। " এই বলেই আবার কান্না ভেঙে পড়েন জাকিরের বাবা হাজী কাঞ্চন মিয়া।