অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

গ্যালারিতে ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশ’ চিৎকার নেই। স্টেডিয়ামজুড়ে নেই বর্ণিল আলোকসজ্জাও। তবে আছে উজ্জ্বল হয়ে ওঠা ‘ফ্লাডলাইটের আলো’ আর দেশজুড়ে ছুটির আমেজ। শুক্রবার এমনিতেই সরকারি ছুটির দিন। তার ওপর চলছে ‘কঠোর বিধিনিষেধ’। চারদিকে অস্বস্তির খবরের তো আর শেষ নেই। এমন দিনে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবার সিরিজ জয়ের খবর পাওয়া গেলে মন্দ হতো না। হলো তো সেটাই। তাতে গড়া হয়েছে আপাতদৃষ্টিতে ‘উৎসবহীন’ এক ইতিহাস।  

দেশের ক্রিকেটে ‘স্বর্ণের অক্ষরে লেখা দিন’ চাইলে হাতে গুণে গুণে বলে দেওয়া যায়। তাতে ৬ আগস্ট অর্থাৎ আজকের দিনটা লিখে রাখাই যায়। অস্ট্রেলিয়াকে টানা তিন ম্যাচ হারিয়ে বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচের সিরিজটা নিজেদের করে নিয়েছে। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতাপশালী দলটির বিরুদ্ধে এই প্রথম এমন কীর্তি!

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রান তাড়া করতে নামেন বেন ম্যাকডারমট ও ম্যাথু ওয়েড। নাসুম আহমেদের করা তৃতীয় ডেলিভারি উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন এক রান করা ওয়েড। এরপর বেশ বড় জুটি গড়েন ম্যাকডারমট ও মিচেল মার্শ। সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে ম্যাকডারমট বোল্ড হলে ভাঙে দুজনের ৬৩ রানের জুটি। এই ওপেনার ৩৫ রানে ফেরেন। 

পরের ওভারে ময়জেস হেনরিকসকে ২ রানে ফিরিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা আনেন শরিফুল ইসলাম। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ভীতি ছড়িয়ে যাচ্ছিলেন মিচেল মার্শ। ৪৫ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি। তবে শরিফুলের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৫১ রানে আউট হন তিনি।

শেষ দুই ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারি ২০ ও ক্রিস্টিয়ান ৭ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে দুই উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান একটি করে উইকেট নেন। 

দিনের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নাইম শেখ ও সৌম্য সরকার। হ্যাজেলউডের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ তুলে দেন নাইম। এই ওপেনার মাত্র এক রান করেন। পরের ওভারের প্রথম বলেই জাম্পার বলে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে ২ রানে আউট হন অপর ওপেনার সৌম্য সরকার।

শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনে মিলে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। এর আগে ১৭ বলে করেন ২৬ রান। 

পাঁচ নম্বরে নেমে দ্রুত রান তুলছিলেন আফিফ হোসেন। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯ রানে রান আউট হন তিনি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ভালো করলেও এই ম্যাচে ব্যর্থ শামীম আহমেদ। ৮ বল খেলে ৩ রান করে ফেরেন তিনি।

নুরুল হাসান সোহান নেমেই একটি ছয় হাঁকিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে তিনিও রান আউট হন। এর আগে করেন ১১ রান। শেষ ওভারে ফিফটি তুলে নেন রিয়াদ। চলতি সিরিজে এটাই দুই দল মিলে কারো প্রথম হাফ সেঞ্চুরি।

তবে এলিসের করা পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান রিয়াদ। এখানেই থেমে থাকেননি এই অজি পেসার। পরবর্তী দুই বলে মুস্তাফিজুর রহমান ও মাহেদী হাসানকে আউট করে অভিষেকেই হ্যাটট্রিকের বিরল কীর্তি গড়েন তিনি। ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে এই রেকর্ড গড়েছেন অজি পেসার। 

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংসের শেষ তিন বলে তিন উইকেট নেন নাথান এলিস। এছাড়া দুটি করে উইকেট শিকার করেন জশ হ্যাজেলউড ও অ্যাডাম জাম্পা। সিরিজের চতুর্থ টি-২০তে আগামীকাল একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে দুই দল।