আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ

আর মাত্র ১ মাস পর মেয়াদ শেষ হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন আইন), ২০০৯-এর ৬ ধারা মোতাবেক ৮ নভেম্বর দায়িত্ব নেবেন নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।ইতোমধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

তবে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্বগ্রহণের আগেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে অল্পবৃষ্টিতে ডুবন্ত অবস্থা থেকে সিলেট নগরীকে মুক্ত করা।

কেননা বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দুই মেয়াদে থাকাবস্থায় জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসাীকে।অল্পবৃষ্টিতে নগরীর অলি-গলিতে হাঁটু-পানি থেকে কোমর পানি অব্দি থাকতে হয়েছে নগরবাসীকে।এসময় জলাবদ্ধতার জন্য নগরবাসী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে দায়ী করেছেন। দীর্ঘদিনের এমন দুর্ভোগ লাগব করতে পারবেন কি ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, প্রশ্ন নগরবাসীর।

আর নবনির্বাচিত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলছেন, নির্বাচনি ইশতেহারে নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও জলাবদ্ধতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া আছে।আমি দায়িত্বগ্রহণের পর বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবো।

সিসিক নির্বাচনের পূর্বে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তার নির্বাচনি ইশতেহারের তিন নম্বর বিষয় হিসেবে‘জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পিত নগরায়ন’ রাখেন। এখন শুধু নগরবাসীর দেখার পালা তিনি তার ইশতেহার পূরণে কতটা ভূমিকা রাখেন।

জানা যায়, সর্বশেষ শনিবার (৭অক্টোবর) ভোররাত থেকে ফের জলমগ্ন হয়ে পড়ে সিলেট। নগরীর বেশিরভাগ এলাকাই পানিতে তলিয়ে যায়। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকান পাট সবস্থানে পানিতে একাকার। পানি ঢুকে পড়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়ও।

তিন ধরে সিলেটে অবিরাম বৃষ্টি হয়। শুক্রবার থেকে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। শুক্রবার রাত থেকেই পানি ঢুকতে শুরু করে নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে। শনিবার সকালের মধ্যে তলিয়ে যায় নগরের বেশিরভাগ এলাকা।

শনিবার ভোররাতে নিজ এলাকায় জলাবদ্ধতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম। তার নিজের বাসাও জলমগ্ন। ভিডিওতে দেখা যায়- ফরহাদ চৌধুরীর বাসার নিচ তলায় পানি থৈ থৈ করছে। আসবাবপত্র অর্ধেক ডুবে আছে পানিতে।

কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মহানগরের ছড়া, নালা ও খালগুলো যথাসময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও আমাদেরকে ফের জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয়েছে। সুরমা নদী খনন না করলে এ ভোগান্তি থেকে আর রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, নগরবাসীকে এমন দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে ক্ষমতাসীন দলের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্বগ্রহণের পর কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা করি।

এব্যাপারে সিসিকের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আজকের বিষয়টি আমি আমার নিজস্ব লোকজন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছি।তা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্বগ্রহণের পর নগরীর জলাবদ্ধতার কারণ অনুসন্ধান করে তা নিরসনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদক্ষেপ নেবো।এক্ষেত্রে নগরবাসীর সহযোগীতা চাই।নগরবাসী আমার উপর আস্তা রাখতে পারেন।ইন্নশাল্লাহ আমি আপনাদের দেয়া দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করতে পারবো।

উল্লেখ্য- চলতি বছরের ২১ জুলাই পঞ্চম সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। আগামী ৮ নভেম্বর তিনি নতুন মেয়র হিসেবে সিসিকের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।বর্তমানে তিনি ব্যক্তিগত সফরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।