পানির নিচে আধা পাকা ধান
লেদারবন্দ ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ছোট বড় চারটি হাওড়ের আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। রোববার বিকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা শেষ সম্বল হিসাবে আধা পাকা বোরো ধানের মুটি কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষকদের অভিযোগ সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড, তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত, মৌখিকভাবে আবেদন করার পরও লেদারবন্দ কুঁড়িতে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করায় চারটি হাওড়ের বোরো ফসল রক্ষায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে আসা হচ্ছে।
বাঁধ নির্মাণে নির্দিষ্ট প্রাক্কলন, ডিজাইজন, এলাইটম্যান্ট তৈলি, পাউবো কিংবা উপজেলা প্রশাসন থেকে সরকারিভাবে লেদারবন্দ কুঁড়ির বাঁধ নির্মাণে কোনো রকম বরাদ্দই দেওয়া হয়নি।
এদিকে সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে দিন কয়েক পূর্বে ফসল রক্ষায় লেদারবন্দ কুড়ির বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু বিধি বাম রোববার সকাল থেকে পাটলাই নদীর ধেয়ে আসা পানির তোড়ে ওই বাঁধ ভেঙে হাওড়গুলোতে থাকা প্রায় ২শ হেক্টর জমির আঁধা পাকা বোরো ধান পানিতেই তলিয়ে যায়।
উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াকুব হোসেন বলেন, লেদারবন্দ কুঁড়র বাঁধ বোরো ফসল রক্ষা বাঁধসহ আরও একাধিক ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন বছরের পর বছর ধরে উদাসিনতার পরিচয় দিয়ে আসছে।
যে কারণে বোরো ফসল গোলায় তোলার দিন কয়েক ইউনিয়ন পরিষদ স্বপ্রণোদিত হয়ে বাঁধ নির্মাণের ব্যয়ভার বহন করেছিল কোনো রকম সরকারি অর্থ বরাদ্দ ছাড়াই কিন্তু ওই বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ২শ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যায়।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান উদ দৌলা বলেন, লেদারন্দ কুঁড়ির বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার উপকারভোগী কৃষক পরিবারগুলোর প্রায় পঞ্চাশ (৫০) হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলার হাফানিয়া গ্রামের কৃষক মো. হযরত আলী বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুমান নির্ভর তথ্য দিচ্ছেন বাস্তবে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি হবে।
উপজেলার মাটিয়াইন হাওড় তীরের কৃষক শামছুল হক, বাচ্চু মিয়াসহ একাধিক কৃষকদের দাবি লেদারবন্দ কুঁড়ির বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় উপজেলা দ্বিতীয় বৃহৎ বোরো ফসলি হাওড় মাটিয়াইন হাওড়ের মেশিনবাড়ি, আলমখালিসহ পাউবোর ফসলরক্ষা বাঁধগুলো নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে।
রোববার রাতে তাহিরপুর উপজেলা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রায়হান কবির বলেন, লেদারবন্দ কুঁড়িরবাঁধ ভাঙ্গার ফলে মাটিয়াইন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধগুলোর কোনো ধরণের হুমকির মুখে পড়বে না বলে আশা করছি। শুধু মাত্র ধরুন্দ বাঁধ ভেঙে গেলেই কেবল মাটিয়াইন হাওড়ের বাঁধগুলো বোরো ফসল রক্ষা করাটা ঝঁকির মুখে পড়তে পারে।