মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে চীনে পুলিশের সঙ্গে মুসলিমদের সংঘর্ষ

মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে চীনে পুলিশের সঙ্গে মুসলিমদের সংঘর্ষ
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া। সূত্র: সিএনএন

সরকারি সিদ্ধান্তে চীনের ইউনান প্রদেশের নাজিয়াইং গ্রামে একটি মসজিদের গম্বুজ ও মিনার ভাঙতে গিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পরে ওই মসজিদ ঘিরে এর প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন স্থানীয় মুসলিমরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁরা সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন। 

মঙ্গলবার সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। 

খবরে বলা হয়, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি চাইছে, সাধারণ মানুষ চীনের প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসেই আস্থা রাখবে। ধর্ম নিয়ে শি জিনপিং-এর নীতির আওতায় দেশজুড়ে বিদেশি ধর্মকে মুছে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় নাজিয়াইং গ্রামের মসজিদটি ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। 

এ অবস্থায় ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে নিজেদের মসজিদ রক্ষায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় মুসলিমদের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। 

জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিম স্থাপত্যরীতিতে তৈরি সহস্রাধিক উইঘুর মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে চীনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এক উইঘুর অধিকারকর্মী জানান, বর্তমানে চীনে যে কয়েকটি মসজিদ অবশিষ্ট আছে তার মধ্যে নাজিয়াইংয়ের মসজিদটি অন্যতম। 

সীমান্তবর্তী ইউনান প্রদেশে টিকে থাকা নাজিয়াইং মসজিদটি ওই প্রদেশের মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আবেগময় একটি স্থান। তাই মসজিদটি ভাঙতে গেলে তা স্থানীয়দের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। তাঁরা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মসজিদটি রক্ষা করার জন্য এর চারপাশে অবস্থান নেন। পরে মসজিদের প্রবেশপথ থেকে মুসলিমদের সরিয়ে দিতে তাঁদের ওপর লাঠিপেটা করে পুলিশ। 

ভিডিওতে দেখা গেছে, লাঠিচার্জের শিকার হলে মুসলিমরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল এবং ইটের টুকরা দিয়ে ঢিল ছুড়তে শুরু করেন। 

ঘটনাস্থলে থাকা এক মুসলিম সিএনএনকে বলেন, ‘ওই মসজিদটি আমাদের মর্যাদার শেষ চিহ্ন। মনে হচ্ছে যেন, তারা বাড়িতে এসে আমাদের ঘরদোর ভেঙে দিচ্ছে। আমরা এমনটি হতে দিতে পারি না।’ 

ঘটনাস্থলে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন জানান, গত শনিবার ওই ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন ১ হাজারের বেশি নারী-পুরুষ, শিশু এমনকি বয়স্করাও মসজিদটি রক্ষা করার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলে। পরে তাদের মধ্য থেকে অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

স্থানীয়রা জানান, শনিবার বেলা ১টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। সে সময় স্থানীয় মুসলিমরা নামাজের জন্য মসজিদটিতে গেলে প্রথমে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ সেখানে ক্রেন নিয়ে হাজির হয়েছিল।