সুনামগঞ্জকে আধুনিক শহরের প্রত্যাশা সবার

সুনামগঞ্জকে আধুনিক শহরের প্রত্যাশা সবার

শহরের যানজট নিরসনে শহরতলির চেকনিখাড়া থেকে পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প সড়ক নির্মাণ, দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা পানি নিস্কাশনের খাল খনন করে খালের পাড় দিয়ে পরিকল্পিত ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং ধারারগাঁও থেকে জলিলপুর পর্যন্ত সুরমা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের মাধ্যমে পাহাড়ি ঢল ঠেকানো ও ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ নানা নাগরিক চাওয়া পূরণ করে সুনামগঞ্জ শহরকে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করার দাবি তুলেছেন পৌর নাগরিকরা।

শনিবার দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ‘শহর সুনামগঞ্জ, পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রত্যাশায়, নাগরিক সংলাপ’ এ এমন দাবি তুলেন পৌর নাগরিকরা।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির আয়োজনে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংলাপে সভাপতিত্ব করেন লাইব্রেরির সভাপতি জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।

লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খলিল রহমানের সঞ্চালনায় নাগরিক সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন পৌর মেয়র নাদের বখ্ত, আলোচনায় অংশ নেন- শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আলী আমজাদ, লাইব্রেরি’র সহসভাপতি সুখেন্দু সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, রাজনীতিবিদ চিত্তরঞ্জন তালুকদার ও অ্যাড. নজরুল ইসলাম, সমাজকর্মী নুরুর রব চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক পূর্ণেন্দু কান্তি দাস, মহিলা কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দিলারা বেগম, নারীনেত্রী গৌরী ভট্টাচার্য, কবি মুনমুন চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য ফৌজি আরা শাম্মী, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, জেলা সিপিবি’র সভাপতি অ্যাড. এনাম আহমদ, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ দে, দৈনিক সুনামকণ্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কুহিনুর বেগম, সমাজকর্মী মুর্শেদ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ, লাইব্রেরীর সহসভাপতি শওকত আলী, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ্ আল নোমান, লাইব্রেরি’র সদস্য শাহীনুর রহমান, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ব্যাংকার্স গোলাম আজাদ, আশরাফ লিটন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মাহবুবুল হাছান শাহীন, শিক্ষক অনুপ নারায়ণ তালুকদার প্রমুখ।

আলোচকরা বললেন, মেঘালয়ের পাদদেশের জেলা শহর সুনামগঞ্জ এখন পর্যটন পিপাসুদেরও পছন্দের শহর। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা হাজারো পর্যটক এই শহর হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সীমান্তের পর্যটন স্পটগুলোতে প্রতিদিন যাচ্ছেন। এজন্যই শহরটিকে নান্দনিক, স্বাস্থ্যকর ও আধুনিক করে গড়ে তোলা সময়ের দাবি। সংলাপে উপস্থিত সকলেই পরিকল্পিত করে শতবছরের উপযোগী করে শহর গড়ে তুলতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বক্তারা বলেন, শহরের আলফাত স্কয়ারকে নান্দনিক করণ, পাশের পুরাতন কলেজ মার্কেটকে আধুনিক বহুতল বিপণি বিতান হিসেবে গড়ে তোলা, পৌরসভার মার্কেটগুলোতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দোকানকোঠা বরাদ্দ রাখা, পুরাতন বাসস্টেশনকে যানজট মুক্ত করে মধ্যশহরের বাইরে ওখানকার পরিবহনগুলোকে নিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য স্থাপনাসহ ডিভাইডার করে পুরাতন বাসস্টেশনকে যানজট মুক্ত করারও পরামর্শ দেন নাগরিকরা।

পৌর মেয়র নাদের বখ্ত বললেন, পৌরসভার প্রকৃত সমস্যাই নাগরিকরা উত্থাপন করেছেন। এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করছে পৌরসভা। নাগরিকদের সহযোগিতা নিয়ে সমস্যা সমাধানে আরও বেশি আন্তরিকভাবে কাজ করার চেষ্টা চালাবে পৌরসভা। উদ্ধার হওয়া খালের উন্নয়নেও পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। খালগুলো পুনরায় যাতে দখল না হয়, সেটিও খেয়াল রাখবে পৌরসভা।

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বললেন, পুরাতন বাসস্টেশনে যানবাহন স্ট্যান্ড থাকবে না। ওখানকার যানবাহন সরিয়ে নেবার জন্য নতুন বাসস্টেশনের পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি মাসেই আশাকরছি নতুন বাসস্টেশন যানজটমুক্ত হবে। শহরের কেন্দ্রস্থলের পুরাতন কলেজ মার্কেটটির ভবনটিকে আধুনিক বিপণি বিতান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করণের কাজ চলছে বলে জানান তিনি। তিনি জানালেন, পৌরসভার উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করছে জেলা প্রশাসন, ভবিষ্যতে এই সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে।

দিনভর এই আয়োজনে শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, রাজনীতিক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার পৌর নাগরিকরা অংশ নেন।