সুনামগঞ্জে চেয়ারম্যানের পেটে নারীদের সঞ্চয়
সুনামগঞ্জের শাল্লায় বাহারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিধান চন্দ্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্টের (ভিজিডি) আওতায় হতদরিদ্র নারীদের সঞ্চিত টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ জানিয়েছেন ওই নারীরা।
এরই মধ্যে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ইউএনও পর্যায়ে অভিযোগ করাসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের উপকারভোগী নারীরা।
বাহাড়া ইউনিয়নের মুক্তারপুরের ঝুমা রানী দাস জানান, ভিজিডির ৩০ কেজি চাল নেওয়ার সময় ২০০ টাকা করে ২৪ মাসে ৪ হাজার টেকা জমা দিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৯৮ জন নারীর জমানো টাকা ফেরত দেননি চেয়ারম্যান। সাত মাসে আগে ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তিন মাস পর যোগাযোগের কথা বলেন। নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর দু’বার গেলেও কোনো লাভ হয়নি।
নাছিমা বেগম নামে আরেক নারী জানান, সেই চেয়ারম্যান পদে নেই। সেজন্য ইউএনওর কাছে গিয়েছিলেন তারা নিজেদের দাবি নিয়ে। ইউএনওর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও সমাধান হয়নি সমস্যার।
শুক্রবার বঞ্চিত নারীদের অনেকেই জানান, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছর মেয়াদে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অতিদরিদ্র মহিলাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য ভিজিডির আওতায় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হতো এবং উপকারভোগীদের দেওয়া ২০০ টাকা করে সঞ্চয় রাখা হতো ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বশীলদের কাছে। সঞ্চিত সেই টাকা মেয়াদ শেষে উপকারভোগীদের ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত ওই ৯৮ জন নারী তাদের সঞ্চিত ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত পাননি। টাকার দায়িত্ব নিচ্ছেন না কেউই।
সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিধান চৌধুরী জানান, পরিষদের সাবেক সচিবের কাছে ওই টাকা রাখা আছে। শুক্রবার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তিনি দিরাইয়ে থাকায় টাকা নিতে পারেননি।
ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সচিব ভানু চাঁদ দাস জানান, টাকা সচিবের কাছে নয়, সাবেক চেয়ারম্যান বিধান চৌধুরীর কাছেই আছে। ইউএনওর সামনেই তিনি এই কথা স্বীকার করেছেন।
ইউএনও আবু তালেব জানান, দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় বর্তমান চেয়ারম্যানের কাছে ওই টাকা হস্তান্তর করা উচিত ছিল সাবেক চেয়ারম্যানের। বিধান চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি টাকা ফেরত না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ নারীরা। বিধান চৌধুরী হাওররক্ষা বাঁধের কাজ করিয়েছিলেন, সেই কাজের ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা আটকে রাখা হয়েছে। ওই টাকা থেকে দরিদ্র নারীদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।