শাবিপ্রবি
‘রক্তাক্ত লাল হাত উপাচার্য ও তার অনুসারীদের নারকীয় তাণ্ডব’

শাবি প্রতিনিধি || বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটা৷ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ‘গোলচত্বরে’ বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড নিয়ে জমায়েত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের কয়েকটিতে দেখা গেছে রক্তাক্ত লাল হাত। শিক্ষার্থীরা জানালেন এই রক্তাক্ত লাল হাত নির্দেশ করছে তাদের উপর ঘটে যাওয়া উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও তার অনুসারীদের নারকীয় তান্ডব৷
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা উপাচার্যের পদত্যাগসহ অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টগুলো দ্রুত চালু করে দেওয়ার দাবি জানান। শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সম্মুখভাগ ও ‘চেতনা–৭১’ সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় গোলচত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় তাদের হাতে ‘দৌড়া, চাটুকার দৌড়া’, ‘ফরিদ হটাও, শাবি বাঁচাও’, ‘১,২,৩,৪, ফরিদ তুই গদি ছাড়’, ‘পালা, চাটুকার পালা’, ‘ফরিদের গদি অস্তাচলে, ফরিদ যাবে রসাতলে’, ‘আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে’, ‘গদির মায়া বড় মায়া?’, ‘ফরিদের দালালেরা হুশিয়ার, সাবধান!’, ‘Save SUST’, ‘অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করো’, ’স্প্লিনটার বিতরণ কেন্দ্র। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের শরীরে স্প্লিনটার সংযোজন করা হয়। যোগাযোগ: শাবিপ্রবি ভিসি কার্যালয়’ ইত্যাদি লেখা এবং ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উপর ঘটে যাওয়া পুলিশি হামলার বিভিন্ন ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়৷ সেই প্ল্যাকার্ডগুলোর কয়েকটিতে আবার দেখা গেছে প্রতিবাদী লেখার পাশাপাশি রক্তাক্ত লাল হাত।
প্ল্যাকার্ডে থাকা রক্তাক্ত লাল হাত কি নির্দেশ করছে –এই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘এই উপাচার্য সহজ কিছু দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার বদলে শিক্ষার্থীদের উপর নারকীয় হামলা চালায়। প্ল্যাকার্ডের এই রক্তাক্ত লাল হাত দেখাচ্ছে, কী রকমের নৃশংসতা নেমে এসেছিলো আমাদের উপর৷ উপাচার্য এবং তার অনুসারীরা মিলে সে-সময় আমাদের উপর কী রকমের নারকীয় তান্ডব ঘটিয়েছিলো – সেই বিষয়টি এ রক্তাক্ত লাল হাতের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে জাফর ইকবাল স্যারের মাধ্যমে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে আমাদের মূল দাবিসহ বাকি দাবিদাওয়াগুলো মেনে নেওয়া হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অনশন থেকে সরে আসি। কিন্তু সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চলমান রেখেছি। যতদিন পর্যন্ত এই উপাচার্য না সরে যাবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
প্রসঙ্গত, গত মাসের ১৩ তারিখ রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। পরে ১৬ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ অবরুদ্ধ হলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিরাট রূপ নেয়।