মোতাওয়াল্লি অপহরণ চেষ্টায় জড়িত দুই কনস্টেবল

মোতাওয়াল্লি অপহরণ চেষ্টায় জড়িত দুই কনস্টেবল

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় একটি মসজিদের মোতাওয়াল্লিকে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ চেষ্টার সঙ্গে দুই পুলিশ কনস্টেবল জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, আরও দুজনকে আসামি করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ওই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

বাদীর দায়ের করা সিআর মামলা তদন্ত করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে সিলেটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ১১ আগস্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে তেমনই এক অনুসন্ধান প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহ ফজলে আজিম পাটোয়ারী।

শাহ ফজলে আজিম পাটোয়ারীর তদন্ত প্রতিবেদন সূত্র মতে, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বেতসুন্দি ফকিরেরগাঁও গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর ছেলে আব্দুস শহিদ (৩৬)।  
 
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোতাওয়াল্লি ও তার প্রতিপক্ষ আব্দুস শহীদের মধ্যে গ্রামের পার্শ্ববর্তী (ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে) শাহ আব্দুর রহিম (র.) মাজার পরিচালনা নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ রয়েছে। আর মোতাওয়াল্লি ওই মাজার পরিচালনা কমিটরও সাবেক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষে মামলাও রয়েছে।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিবি পরিচয়ে মোতাওয়াল্লি নিজাম উদ্দিনকে বাড়ি থেকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। ঘটনার দিন রাতে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ঘর থেকে বের করে অপহরণকারীদের সঙ্গে থাকা নোহা (সিলেট-ছ-১১-০৫৩৫) গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনার ৫দিন পর (গত ১মার্চ) বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজসহ সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি ৩য় আদালতে অপহরণ চেষ্টা মামলা দায়ের করেন, (সিআর মামলা নং ৪৪/২১ইং)।

মামলায় অভিযুক্ত করেন পার্শ্ববর্তী মোগলাবাজার থানার গঙ্গারচর (আলমপুর) গ্রামের দিলোয়ার হোসেনের ছেলে কথিত সাংবাদিক নিজামুল হক লিটনকে (৩৫)। ওইদিন শুনানি শেষে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিলেট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে।

তবে, মামলায় কেবল লিটনকে অভিযুক্ত করা হলেও পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহ ফজলে আজিম পাটোয়ারীর দীর্ঘ তদন্তে বেরিয়ে আসে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন সিলেটের দুই পুলিশ সদস্যও। আর এ ঘটনার মুল পরিকল্পনায় ছিলেন মোতাওয়াল্লির প্রতিপক্ষ আব্দুস শহীদ। ওই ৪জনকে অভিযুক্ত করে গত ১১ আগস্ট তিনি সিলেট আদালতে চূড়ান্ত অনুসন্ধানী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন, (প্রতিবেদন স্মারক নং-পিবিআই/সিলেট জেলা/২৩১৩)।

অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের একজন হলেন কনস্টেবল (ভিপি ৮৪০৩০৯২৯৫৭) শরীফ রানা (৩৭)। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা থাকায় ২০১৫ সালে সিলেট কোতোয়ালী থানা থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়, (মামলা মামলা নং-১১)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার ব্রম্মণহাতা গ্রামের হেফজুল বারীর ছেলে শরীফ বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

আর অভিযুক্ত অপর পুলিশ কনস্টেবল (ভিপি নং ৯০১১১২৬৩৫৬) হলেন সিরাজুল ইসলাম (৩০)। ঘটনার সময় তিনি সিলেট জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে বানিয়চঙ্গ থানায় কর্মরত সিরাজুল সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার কাছিরগাতি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।

পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহ ফজলে আজিম পাটোয়ারী বলেন, বাদী তার মামলায় একজনের নাম উল্লেখ করেছে। কিন্তু আমরা সিসি টিভির ফুটেজ দেখে ও তদন্ত করে গাড়ির চালকের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে বাকি আসামিদের শনাক্ত করেছি। তদন্তকালীন সময়ে এজাহার নামীয় একমাত্র আসামি লিটন মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেই। আর অনুসন্ধান শেষে বাকি তিনজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করি।