বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হতে যাচ্ছেন সিলেটের রুমা চক্রবর্তী!
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে জমা দেয়া মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে সবগুলো মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান তালুকদার। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সোমবার সকালে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে যাচাই-বাচাই শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে জোটভুক্ত আওয়ামী লীগের ৪৮টি ও জাতীয় পার্টির দুটি মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই ৫০ জনের মধ্যে রয়েছেন সিলেটের সংরক্ষিত নারী এমপি পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী।
ইসির রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কমিশনের যুগ্ম সচিব মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘বাছাইয়ে কারও নাম বাদ না পড়লেও বৈধ মনোনয়নপত্রের বিরুদ্ধে কেউ চাইলে আপিল করতে পারবেন। আর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আপিল নিষ্পত্তির জন্য ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন রাখা হয়েছে। এরপর কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে বৈধ প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সিলেট থেকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরীকে। যিনি রুমা চক্রবর্তী হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত।
আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর নাম প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই অনেকেই চমক হিসেবে দেখছেন। সিলেটের ১৯টি সংসদীয় আসনে একমাত্র সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হচ্ছেন তিনি।
সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বাইরে থাকা রুমা চক্রবর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের প্রথম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও কাজ করেছেন একেবারে তৃণমূলে। ১৯৯৭ সালে ৯নং মুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১ নং ওয়ার্ডের (৭,৮ ও ৯ ওয়ার্ড) সদস্যা হিসেবে নির্বাচিত হোন।
২০১০ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ানীবাজার উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
১৯৫৬ সালের ৫ মার্চ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কালিগঞ্জের মৌজপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী ও মাতা সরুজু বালা রায় চৌধুরীর পাঁচ কন্যার মধ্যে চতুর্থ। বাবা বরীন্দ্র রায় চৌধুরী সিলেট পৌরসভায় ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত (আমৃত্যু) এম.বিডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রুমা চক্রবর্তী একাত্তরে স্কুল ছাত্রী ছিলেন। দেশের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এছাড়া আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করেন এই সাহসী নারী।
১৯৭৫ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য রমেন্দ্র চক্রবর্তীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।