এমপি আনার হত্যা: ডিবি প্রতিনিধি দল কলকাতায়
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের তদন্ত করতে কলকাতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা প্রতিনিধি (ডিবি) দল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলকাতার নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ওই প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- আব্দুল আহাদ ও সাহেদুর রহমান।
বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ডিবি প্রধান। তিনি জানান, বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় সংসদ সদস্য এমপি আনার। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিদেশের মাটিতে কোথাও ফেলে দেয়া হয়েছে। এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামানসহ যারা হত্যাকারী সবাই বাংলাদেশি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ৩৬৪ ধারায় অপহরণের মামলা করা হয়েছে। মামলা অনুযায়ী, বাংলাদেশে খুনের পরিকল্পনা হয়েছে এবং কলকাতায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরে গুম করার জন্য এমপি আনারের মরদেহের টুকরো বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়া হয়েছে।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে, অপরাধ যেখান থেকে শুরু হয়েছে এবং শেষ হয়েছে তা খুঁজে বের করা। তিনি বলনে, ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অনুযায়ী, তদন্তকারী দলকে দুটি স্থানে পরিদর্শন করতে হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, পূর্ববঙ্গ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিমুল বিশ্বাস। তিনি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। আর আমানুল্লাহ নামে এ ব্যক্তি ভারতে এসেছেন। তার কাছে অনেক তথ্য পেয়েছি। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এবং আমাদের মধ্যে অনেক তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে। আমরা কলকাতা পুলিশের কাছে থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা চাইবো। এরপর এই খুনের পেছনের মূল কারণ কি রয়েছে, তা খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তিনি।
গত ১৩ মে এই অভিজাত আবাসনেই এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। তদন্তে নেমে গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কসাই জিহাদ হাওলাদারকে। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, এমপি আনারের লাশের টুকরে ফেলা হয়েছিল ভাঙ্গড়ের কৃষ্ণমাটি এলাকায়। ফলে লাশের টুকরোর সন্ধান পেতে গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় কৃষ্ণমাটি এলাকার জিরানগাছা বাগজোলা খাল ও সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি আভিযান চালায় সিআইডি। এমনকি অভিযুক্ত জিহাদ হাওলাদারকেও সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। পানিতে নামানো হয় কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের। জাল ও যন্ত্রচালিত নৌকা ব্যবহার করেও খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই লাশের টুকরো। কিন্তু লাশ বা লাশের টুকরো না পেলে খুনের মামলাও দায়ের করতে পারছে না পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার করা কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে নিউ টাউনের সেই অভিজাত সঞ্জীবা আবাসনের ‘বিইউ-৫৬’ ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে গিয়ে খুনের ঘটনার পুনঃনির্মাণ করতে পারে সিআইডি।