নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বামী কারাগারে

নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বামী কারাগারে

সিলেটে নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ফারজানা হক মিলি (২৫) নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী নুর আলমকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে সিলেট নগরের তেলিহাওর সিলভ্যালী টাওয়ারের এ-২ ফ্লাট থেকে জেলা দলের সাবেক ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় (শাটলার) ফারজানা হক মিলির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মিলির বড় বোন রুমানা হক সোহেলী বাদি হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজহারে উল্লেখ করেন, প্রায় চার বছর আগে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার কালিয়ারকাপন গ্রামের মো. আশকর আলীর ছেলে মো. নূর আলমের সঙ্গে মিলির বিয়ে হয়। নূর আলম অনলাইনে জুয়া ও নেশায় আসক্ত ছিল। সে টাকার জন্য প্রায়ই মিলিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। মারধর করে মিলির ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকাও তুলে নেন।

এছাড়া নগরীর জিন্দাবাজারের একটি জুয়েলার্সে মিলির স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখেও ঋণ নেন নুর আলম। গত ৪ জানুয়ারি মিলিকে ৫ হাজার টাকা দিতে বললে সে অপরাগতা প্রকাশ করে। এরই জের ধরে মিলিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আত্মহত্যার প্ররোচণা দেয়। নির্যাতন সইতে না পেরে গত ৫ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে মিলি তার রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে সোহেলী দরজা খোলার চেষ্টা করতে নূর আলমকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে নূর কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে সোহেলী তার স্বামী রিপন খানকে দিয়ে দরজা খোলার উদ্যোগ নিয়ে তাতেও নূর আলম বাধা দেন।

এ অবস্থায় শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তালা-চাবির কারিগর দিয়ে দরজা খুললে শয়ন কক্ষে মিলির ঝুলন্ত মরদেহ দেখা যায়।

সিলেট কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী মাহমুদ বলেন, রোববার (৯ জানুয়ারি) ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আত্মহত্যার প্ররোচনায় মিলির স্বামীকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের কর হয়। এ মামলায় নুর আলমকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার রিমান্ড চাওয়া হতে পারে।  

এদিকে, নিহতের ভাই সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম সিপন বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরের নয়াসড়ক জামে মসজিদে মিলির জানাযা শেষে মরদেহ পাশ্ববর্তী মানিকপীর (র.) মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার চাই।